পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
বিদ্যাসাগর।

ভূমি লইতে সন্মত হন নাই। বিদ্যাসাগর মহাশয় স্বরচিত চরিতে পিতামহ সম্বন্ধে এইরূপ লিখিয়াছেন,—

 “তিনি কখন,পরের উপাসনা বা আনুগত্য - করিতে পারেন নাই। তাঁহার স্থির সিদ্ধান্ত ছিল, অন্যের উপাসনা বা আনুগত্য অপেক্ষা প্রাণ ত্যাগ করা ভাল। তিনি একাহারী, নিরামিষাশী, সদাচারপূত ও নৈমিত্তিক কর্ম্মে সবিশেষ অবহিত ছিলেন।”

 রামজয়ের বিপুল হৃদয়-বলের ন্যায় শারীরিক বল ছিল মনের বল থাকিলে, দেহের বল যেন আপনি আসিয়া পড়ে। দেহ-মনের এমনই নিত্য নিকট সম্বন্ধ। বিদ্যাসাগর মহাশয়ে ইহা আমরা প্রত্যক্ষ করিয়াছি; পিতামহ রামজয়ের কথা শুনিয়াছি। রামজয় সর্ব্বদাই লৌহদণ্ড হস্তে নির্ভীকচিত্তে ভ্রমণ করিতেন। এক সময় তিনি বীরসিংহ হইতে মেদিনীপুরে যাইতেছিলেন, পথের মধ্যে এক ভল্লুক তাঁহাকে আক্রমণ করে। তিনি ভল্লুককে দেখিয়াই এক বৃক্ষের অন্তরালে দণ্ডায়মান হন। ভল্লুকও তাঁহাকে ধরিবার চেষ্টা করে। ভল্লুক যেমন দুইটি হস্ত প্রসারণ করিয়া ধরিতে যাইল, তিনি অমনই তাঁহার দুইটি হাত ধরিয়া বৃক্ষে ঘর্ষণ করিতে লাগিলেন। ভল্লুক তখনই মৃতপ্রায় হইয়া পড়িল রামজয় তাঁহাকে মৃতপ্রায় দেখিয়া চলিয়া যাইবার উপক্রম করিলেন। ভল্লুক কিন্তু তাহার পশ্চাদভাগে নখরাঘাত করে। রামজয় অনন্যোপায় হইয়া হস্তস্থিত লৌহদণ্ড-আঘাতে তাঁহার প্রাণনাশ করেন। তঁহাকে প্রশষ মাসাধিক নখরাঘাতের ক্ষতজনিত ক্লেশ ভোগ করিতে হইয়াছিল। মৃত্যুকাল পর্যন্ত নখরাঘাতের চিহ্ন

 ঠাকুরদাস কার্যক্ষম হইলে রামজয় পুনরায় তীর্থভ্রমণে বহির্গত