পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৬৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৯৮
বিদ্যাসাগর।

ন্যায় স্নেহ করিতেন। অমূল্যচরণও পুত্রের ন্যায় কার্য্য করিয়াছিলেন।

 ৪ঠা শ্রাবণ বিদ্যাসাগর মহাশয় শয্যাশায়ী হন। ইহার পূর্ব্বে তিনি উঠিতে বসিতে পারিতেন, আর তাহা পারিলেন না। এই দিন একটু জ্বর হইয়াছিল। ইহার পর ১০ই শ্রাবণ পর্য্যন্ত কোন দিন একটু ভাল, কোন দিন একটু মন্দ গিয়াছিল। ৮ই শ্রাবণ নূতন উইল করিবার কথা উঠে। শ্রীযুক্ত গোলাপচন্দ্র শাস্ত্রী মহাশয় উইলের খসড়াও করিয়াছিলেন, কিন্তু বিদ্যাসাগর মহাশয় তাহাতে স্বাক্ষর করিতে পারেন নাই। এই সময় বিদ্যাসাগর মহাশয় স্কুল ও কলেজ একটি কমিটীর হস্তে সমৰ্পণ করিবার সঙ্কল্প করিয়াছিলেন। সে কথ উইলে লিখিত হইয়াছিল।

 ১১ই শ্রাবণ রবিবার প্রাতঃকাল হইতে বেলা আড়াই প্রহর পর্য্যন্ত অবস্থা খুব মন্দ হইয়াছিল। আবল্য ও মাদকতা বাড়িয়াছিল। নিশ্বাস প্রশ্বাসে ভাবান্তর হইয়াছিল। প্রবল তাপে জ্বর ফুটিয়াছিল। এই দিন কবিরাজ ব্রজেন্দ্র কুমার সেন আশঙ্কিত হইয়াছিলেন। কবিরাজ শ্রীযুক্ত বিজয় রত্ন সেনকে আনান হইয়াছিল। তিনি একটীবার মাত্র দেখিয়াছিলেন। তিনি বলেন,— “বাহিরে যত মন্দ বলিয়া বোধ হয়, ভিতরে তত মন্দ নয়।” কিন্তু হায়! বিধি বাম!

 ক্রমেই রোগ বৃদ্ধি পাইতে লাগিল। ১২ই শ্রাবণ সোমবার একরূপ অচৈতন্য অবস্থা ছিল। মুখের ভাব বিকৃত হয় নাই। ভাবে বোধ হইত, ভিতরে ভয়ানক যন্ত্রণা, বিরাট-পুরুষ বিদ্যাসাগর সে যন্ত্রণা সহ্য করিয়াছিলেন।

 রোগের সঙ্গে যাতনা বাড়িল; যাতনা বাড়িল, কিন্তু সাগরের