পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
বিদ্যাসাগর।

 বিদ্যাসাগর বাল্যকালে বড় দুষ্ট ছিলেন। তাঁহার বালকসুলভ অনেক “দুষ্টুমি”রই পরিচয় পাওয়া যায়। অনেকেই তে। বাল্যকালে দুষ্টু হইয়া থাকে; কিন্তু সকলের কথা তো আর স্মরণীয় হয় না; পরন্তু ইতিহাসের পৃষ্ঠায়ও স্থান পায় না। ভবিষ্যৎ জীবন যাঁহার উজ্জ্বলতম হয়, তাহার বাল্যজীবন জানিতে লোকের আগ্রহ হইয়া থাকে। তাঁহার বাল্য জীবনের “দুষ্টুমি"টুকু জানিতে কেমন যেন মিষ্ট লাগে। ভগবান মানবাকারে লীলাচ্ছলে কৃষ্ণরূপে গোপগোপীদের ঘরে প্রবেশ করিয়া দুগ্ধ হাঁড়ি ভাঙিতেন; শ্রীশ্রীমহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য বাল্যকালে গঙ্গাতীরে ব্রাহ্মণদের নৈবেদ্য কাড়িয়া খাইতেন; সেক্সপিয়র বাল্যকালে দুষ্টু ছেলেদের সঙ্গে ছুটিয়া হরিণ চুরি করিয়াছিলেন; কবি ওয়ার্ডসওয়ার্থের জ্বালায় তাহার জননী জ্বালাতন হইতেন। কোথায় কিছু নাই, একবার বালক ওয়ার্ডসওয়ার্থ, ঘরের একখানা সেকেলে সাবেক ছবি দেখিয়া বড় ভাইকে বলিয়াছিলেন,—“দাদা। ছবিখানিতে ঘা-কতক চাবুক লাগাইয়া দাও তো”। বড় ভাই শুনেন নাই। তখন ওয়ার্ডসওয়ার্থ আপনি সপাসপ, চাবুক বসাইয়া দেন। বিলাতী পাদরী ডাক্তার পেলী বাল্যকালে বড় দুষ্টু ছিলেন। তখন তাহার জ্বালায় রাত্রিকালে পাড়ার লোক ঘুমাইতে পারিত না। এমন অনেক প্রতিষ্ঠাশালী প্রতিভাবান ব্যক্তির বাল্যজীবনের বাল্য স্বভাবোচিত “দুষ্টুমি"র কথা শুনা যায়। ছেলে দুষ্টুমি হইলে অনেকে অনেক সময় এই সব দৃষ্টান্তের স্মরণ করিয়া ভবিষ্যতের জন্য বুক বাঁধিয়া থাকেন। এক সময় এক ব্যক্তি একটি পুত্রকে সঙ্গে করিয়া লইয়া বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সহিত .সাক্ষাৎ করিতে যান। বিদ্যাসাগর মহাশয় বলেন,—“এ ছেলেটা ভবিষ্যতে বড় লোক হবে।” আগন্তুক বলিলেন,—“মহাশয়! এ