পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৭০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৭২
বিদ্যাসাগর।

করিল দুঃখের বিষয় এই ষে, বঙ্কিমচন্দ্র উহার সম্পাদন ভার পরিত্যাগ করিলে ১২৮২ বঙ্গাব্দে উহা উঠিয়া যায়। বহুদিন পরে উহা আবার নূতন সম্পাদকের অধীনে পুনঃ প্রকাশিত হইতে আরম্ভ হইয়াছে।

 বঙ্কিমচন্দ্র কেবল যে উপন্যাস রচনাতেই কৃতিত্ব প্রদর্শন করিয়াছেন, এমত নহে। ধর্ম্মতত্ত্ব বিষয়েও ইনি অতি উৎকৃষ্ট পুস্তক লিখিয়াছেন। ধর্ম্মবিষয়ক্ পুস্তকগুলিতে ইঁহার যথেষ্ট সূক্ষ্মদর্শিতা, দুরদর্শিতা, আন্তরিকতা ও গবেষণার পরিচয় পাওয়া যায়। ফলতঃ ভূদেব মুখোপাধ্যায়ের পর বঙ্কিমচন্দ্র ভিন্ন আর কেহ এরূপ পুস্তক বাঙ্গালী ভাষায় লিখিয়া প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়াছেন বলিয়া বোধ হয় না। ইঁহার রচিত “কৃষ্ণচরিত” পাঠে, বহু ব্যক্তি শ্রীকৃষ্ণের প্রতি ভক্তিমান্ হইয়াছেন এবং তাঁহাকে ভগবানের পূর্ণ অবতীর বলিয়া স্বীকার করিতে বাধ্য হইয়াছেন। ইঁহার রচিত “ধর্ম্মতত্ত্ব” বঙ্গভাষায় ধর্ম্মবিষয়ক একখানি উৎকৃষ্ট গ্রন্থ। এই পুস্তক অভিনিবেশ সহকারে পাঠ করিলে সকলকেই হিন্দুধর্ম্মের মহত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব মুক্ত কণ্ঠে স্বীকার করিতে হইবে।

 বঙ্কিমচন্দ্র যেমন অলৌকিক প্রতিভাসম্পন্ন, তেমনই অসামান্ত স্বদেশপ্রেমিক। ইঁহার রচিত অধিকাংশ গ্রন্থে ইঁহার সেই স্বদেশপ্রেমিকতার উচ্ছ্বাস সুপরিস্ফুট।

 বঙ্কিমচন্ত্রের রচিত গ্রন্থাবলীর মধ্যে প্রধান প্রধান কয়েকখানির নাম দেওয়া গেল, যথা-দুর্গেশনন্দিনী, কপালকুণ্ডল, মৃণালিনী, বিষবৃক্ষ, চন্দ্রশেখর, কৃষ্ণকান্তের উইল, দেবী চৌধুরাণী, সীতারাম, আনন্দমঠ, রজনী, যুগলাঙ্গুরীয়, রাধারাণী, রাজসিংহ, ইন্দিরা,