পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৭১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৮২
বিদ্যাসাগর।

শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। রামকৃষ্ণ বলিতেন, রমণী মাত্রই বিশ্বজননী। কথিত আছে, ইনি একহাতে টাকা ও অপর হাতে মাটী লইয়া টাকাকে মাটী ও মাটীকে টাকা বলিতে ৰলিতে উভয়ের পার্থক্য ভুলিয়া যাইতেন। আরও কথিত আছে যে, যখন ইনি সমাধিমগ্ন হইতেন, সেই সময়ে ইঁহার দেহের যে কোন স্থানে টাকা স্পৃষ্ট হইলে সেই স্থানটী সঙ্কুচিত হইত। প্রথমে এক সন্ন্যাসিনীর নিকট তাহার পর তোতাপুরী নামক এক যোগীর নিকট কিছুদিন ইনি যোগ ও বেদান্ত শিক্ষা করেন। রামকৃষ্ণ কথম সন্ন্যাসীর বেশ ধারণ করেন নাই। ইনি সংসারে থাকিয়াই নির্লিপ্তভাবে সমাগত লোককে ধর্ম্মের গৃঢ় তত্বের উপদেশ দিতেন। অতি সহজ ভাষায় উপমা দিয়া এবং গল্পের অবতারণা করিয়া ইনি পুরাণাদি ও বেদান্তের গভীর ও জটিল তত্ত্ব বুঝাইতেন) রামকৃষ্ণের উপদেশ প্রণালীর ইহাই বিশেষত্ব। কেশবচন্দ্র সেন, প্রতাপচন্দ্র মজুমদার, ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকার, নরেন্দ্রনাথ দত্ত (যিনি পরে স্বামী বিবেকানন্দ নামে পরিচিত হইয়াছিলেন), রামচন্দ্র দত্ত, মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত প্রভৃতি শিক্ষিত বাঙ্গালিগণ ইঁহার উপদেশ অতি আগ্রহের সহিত শ্রৰণ করিতেন। কিন্তু “গুরু” অভিধা গ্রহণ করিয়া ইনি শিষ্যগণকে শিক্ষা দিতেছেন, এ ভাব ইঁহার মনে স্থান পাইত না। দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ীর উত্তর পশ্চিম কোণে ইঁহার অধিবেশন ও শয়ন গৃহ ছিল। প্রত্যহই সেই ঘর পরমহংসের দর্শন ও তাঁহার জ্ঞানগর্ভ উপদেশ-শ্রবণেচ্ছুগণে পরিপূরিত হইত। রামকৃষ্ণ সকলকেই মিষ্ট বচন ও রহস্যালাপের সঙ্গে সঙ্গে ধর্ম্মোপদেশ দান করিয়া পরিতুষ্ট করিতেন। এখনও সেই