পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মহদাশ্রয়।
৪৭

কীর্ত্তিমান হইয়া গিয়াছেন। কলিকাতার কোটিপতি রামদুলাল সরকার বাল্যকালে যদি হাটখেলার সেই সদাশয় দত্ত-পরিবারে প্রতিপালিত না হইতেন, তাহা হইলে কে বলিতে পারে, তিনি ভবিষ্যৎ-জীবনে অতুল ধনের অধিকারী হইয়া অক্ষয় কীর্ত্তি-সঞ্চয়ে সমর্থ হইতেন? রামদুলালের বালা-দরিদ্রতা এবং দত্ত-পরিবারের তৎপ্রতি সদাশয়তার কথা স্মরণ হইলে বাস্তবিকই মনে এক অচিন্তনীয় ভাবের উদয় হয়। বিলাতের বিখ্যাত গ্রন্থকার জনাথন সুইফট যদি বাল্যকালে স্যার উইলিয়ম্ হামিল্টনের আশ্রয় না লইতেন এবং জার্ম্মাণ পণ্ডিত হিম্‌ ধর্ম্মপিতার সাহায্য না পাইতেন, তাহা হইলে এ জগতে তাহারা ফুটিতেন কি না সন্দেহু।

 বালক বিদ্যাসাগর অগ্রহায়ণ মাসে কলিকাতায় আসিয়াছিলেন; কিন্তু ফাল্গুন মাসের প্রারম্ভে রক্তাতিসার রোগে আক্রান্ত হন। ক্রমে পীড়া এত দূর উৎকট হইয়া পড়ে যে, মল-মূত্রত্যাগে তিনি সর্ব্বদা সাবধান হইতে পারিতেন না। তাঁহার পিতাকে অনেক সময় স্বহস্তে মলমূত্র পরিষ্কার করিতে ছুইত। ঐ পল্লীর দুর্গাদাস কবিরাজ তাঁহার চিকিৎসা করেন; কিন্তু রোগ উত্তরোক্তর বৃদ্ধি প্রাপ্ত হইয়াছিল। বীরসিংহ গ্রামে সংবাদ যায়। পিতামহী সংবাদ পাইয়া কলিকাতায় আসিয়া উপস্থিত হন। তিনি কলিকাতায় দুই দিন থাকিয়া ঈশ্বরচন্দ্রকে বাড়ী লইয়া যান। তথায় সাত আট দিনের মধ্যে বিনা চিকিৎসায় ঈশ্বরচন্দ্র সম্পূর্ণরূপে আরোগ্য লাভ করিয়াছিলেন।

 বৈশাখ মাস পর্য্যন্ত ঈশ্বরচন্দ্র বাড়ীতে ছিলেন। জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রারম্ভে পিতা ঠাকুরদাস তাঁহকে পুনরায় কলিকাতায় আনয়নার্থ বীরসিংহ গ্রামে গমন করেন। এবারও পদব্রজে আসা স্থির হয়: