পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পিতার অধ্যাবসায়।
৬১

কালে প্রত্যন্ত পিতার নিকট তাঁহার আবৃত্তি করিতেন। তাঁহার জনক মহাশয় সংক্ষিপ্তসার ব্যাকরণ সম্পূর্ণ না হউক, তাহার অধিকাংশ যে জানিতেন, বিদ্যাসাগর মহাশয় তাহা আত্ম-জীবনীর একাংশে স্বীকার করিয়া গিয়াছেন। তিনি যে ব্যাকরণ পাঠ করিয়া আয়ত্ত করিতে পারিয়াছিলেন, তাঁঁহার নিদর্শনও পাইয়াছি। তাঁহার নিকটে যিনি ব্যাকরণ পড়িয়াছিলেন, তিনি রীতিমত ভট্টাচার্য্য হইয়া অধ্যাপকতা করিয়াছেন। প্রত্যহ পুত্রের আবৃত্তি শুনিয়া ব্যাকরণে ঠাকুরদাসের অভিজ্ঞতা বৰ্দ্ধিত হইয়াছিল। পুত্র কোন কথা বিস্মৃত হইলে পিতা তাহা স্মরণ করাইয়া দিতেন। পুত্র বুঝিতেন, তাহার পিতা ব্যাকরণে সবিশেষ বুৎপন্ন। পুত্রের নিকট পিতার প্রকারান্তরে কৌশলে অনুশীলন এরূপ দৃষ্টান্ত বিরল।

 পুত্রের বিদ্যানুরাগিতা-সম্বৰ্দ্ধনসম্বন্ধে পর-সেবা-নিরত হইয়াও পিতা এক মুহূর্ত্তের জন্য কোনরূপ ত্রুটি করিতেন না। কার্য্যস্থানের কঠোর পরিশ্রমেও তিনি ক্লান্তি বোধ করিতেন না। বাত্রি নয়টার পর বাসায় ফিরিয়া তিনি রন্ধনাদি করিতেন এবং পুত্রকে আহার করাইয়া আপনি আহার করিতেন। তাহার পর পিতা-পুত্রে একত্র শয়ন করিতেন। শেষ রীত্রিতে পিতা, পুত্রের পঠিত বিদ্যার পর্য্যালোচনায় ব্যাপৃত থাকিতেন। মধ্যে মধ্যে তিনি পর-মুখ-শ্রুত নিজের অভ্যস্ত নানাবিধ উদ্ভট শ্লোক পুত্রকে শিখাইতেন।

 ঠাকুরদাস কঠোর-শাসনের পক্ষপাতী ছিলেন। যে দিন তিনি দেখিতেন, ঈশ্বরচন্দ্র ঘুমাইয়া পড়িয়াছেন, সে দিন তাঁহাকে নিদারুণ প্রহার করিতেন। এক দিন ঈশ্বরচন্দ্র