পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চাকরি
১০৯

নিবাসী তাঁহার পরমবন্ধু ডাক্তার নবীনচন্দ্র মিত্রের বাটীতে মধ্যে মধ্যে যাইতেন; তথাকার কয়েকজন বালক তাঁহার সঙ্গে আসিয়া, বাসায় অবস্থান করিয়া অধ্যয়নে প্রবৃত্ত হন। ঐরূপ বর্দ্ধমান জেলার অন্তঃপাতী যৌগ্রাম হইতে নিমাইচরণ সিংহ বাসায় অবস্থিতি করিয়া সংস্কৃত-কলেজে শিক্ষা করেন। খাঁটুরা গোবরডাঙ্গার কালীপদ বন্দ্যোপাধ্যায় নামক এক বালক তাঁহার নিকট ক্রন্দন করায়, কয়েক বৎসর অন্নবস্ত্র দিয়া সংস্কৃত-কলেজে প্রবিষ্ট করাইয়া দেন।

 এই সময়ে বর্দ্ধমান, নদীয়া, হুগলি ও মেদিনীপুর এই জেলাচতুষ্টয়ের বিদ্যালয়সমূহের তত্ত্বাবধানের জন্য তারাশঙ্কর ভট্টাচার্য্য, মাধবচন্দ্র গোস্বামী, দীনবন্ধু ন্যায়রত্ন ও হরিনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেপুটী ইন্‌স্পেক্টার নিযুক্ত করেন। ইঁহারা চারিজনে প্রত্যেকে এক এক জেলায় নিযুক্ত হন।

 মধ্যে মধ্যে দেশে গিয়া বীরসিংহ বিদ্যালয়ের ও নাইট্‌-স্কুলের বা রাখালস্কুলের অনেক দরিদ্র বালক বাটীতে ভোজন করিয়া অধ্যয়ন করিবে, এইরূপ ব্যবস্থা করিয়া দিয়াছিলেন। এতদ্ব্যতীত বিদেশস্থ অনেক ব্রাহ্মণতনয়কে নিজ বাটীতে অন্ন দিয়া, বীরসিংহ বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করাইতেন। এস্থলে উঁহাদের মধ্যে কয়েকটির নাম প্রদত্ত হইল—জেলা মেদিনীপুরের কুঙাপুরগ্রামনিবাসী পণ্ডিত অন্নদাপ্রসাদ ন্যায়ালঙ্কারের পুত্র ঈশ্বরচন্দ্র ভট্টাচার্য্য ও ঈশানচন্দ্র ভট্টাচার্য্য়, নারাজোলনিবাসী দর্পনারায়ণ বিদ্যাভূষণের পুত্র দিগম্বর চক্রবর্তী, শ্রীবরা গ্রামের ভট্টাচার্য্য়মহাশয়দের বাটীর দৌহিত্রসন্তান বেণীমাধব বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দ্রামেড়নিবাসী রামার্চ্চন বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা হুগলির ঝিংকরানিবাসী দুর্গাপ্রসাদ চূড়ামণির পুত্র বরদাপ্রসাদ ও সারদাপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য়, ঐ গ্রামবাসী রামলাল বন্দ্যোপাধ্যায় প্রভৃতি ন্যুনাধিক ৬০ জন বালক বাটীতে ভোজন করিয়া, লেখাপড়া শিক্ষা করিত। মধ্যে মধ্যে পিতৃদেব বলিতেন যে, আমি বাল্যকালে বিলক্ষণ অম্নকষ্ট পাইয়াছি, অতএব অন্নব্যয় করা সর্ব্বাপেক্ষা প্রধান কর্ম্ম। পিতৃদেব স্বয়ং কুমারগঞ্জের হাটে যাইয়া, দ্রব্যাদি ক্রয় করিয়া আনিতেন; ছাত্র সকলকে এবং পুত্র, পৌত্র, দৌহিত্র-