পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিধবাবিবাহ।
১৩৭

দুইটী ঘর লইবার জন্য শিক্ষাসমাজের কর্ম্মাধ্যক্ষকে জানাইলে, তিনি অগ্রজ মহাশয়কে বলেন যে, তুমি নিজে হিন্দু-কলেজের প্রিন্সিপাল সার্টক্লিপ সাহেবকে বলিবে। তাহাতে বিদ্যাসাগর মহাশয় বলেন যে, সাটক্লিপের সহিত বিদ্যালয় উপলক্ষে বিলক্ষণ মনান্তর আছে; আমি তাহাকে কোন কথা বলিব না। ইহাতে সাহেব জীদ্‌ করিয়া বলেন যে, তোমাকে তাঁহার নিকট যাইতে হইবে। তচ্ছ্রবণে অগ্রজ বলেন যে, তুমি যদি একদিন তথায় যাইয়া আমায় ডাকাও, তাহা হইলে অগত্যা আমায় যাইতে হইবে। কয়েক দিন পরে সাহেব, হিন্দুকলেজে গিয়াছিলেন; কিন্তু বিদ্যাসাগর মহাশয়কে ডাকান নাই। সুতরাং তথায় যাইয়া দেখা না করিয়া, সাহেবের বাটীতে গিয়া, ঘরের কথা উল্লেখ করিলে, তিনি অগ্রজকে সার্টক্লিপের সহিত দেখা করিতে বারম্বার জীদ্‌ করিলেন। তাহাতে অগ্রজ, তৎক্ষণাৎ সেইখানেই কাগজ লইয়া, রেজাইনপত্র লিখিয়া দিয়া প্রস্থান করেন। পরে রেজাইন-পত্র দেখিয়া লেপ্টেনেণ্ট গবর্ণর, রেজাইন মঞ্জুর করিতে ইচ্ছা করেন নাই। তিনি তাঁহাকে ডাকাইয়া পাঠান, কিন্তু অগ্রজ তাহাতেও দেখা করিতে যান নাই। অবশেষে বেতন বৃদ্ধি করিয়া দিতে স্বীকার পাইলেও বলিয়াছিলেন, আর চাকরি করিব না। অনেকে রেজাইন-পত্র ফিরিয়া লইতে অনুরোধ করিয়াছিলেন, কিন্তু অগ্রজ কাহারও উপদেশ শ্রবণ করেন নাই।

 ১৮৫৮ খৃঃ অব্দের শেষে বিদ্যাসাগর মহাশয়, সংস্কৃত-কলেজের প্রিন্সিপালের পদ পরিত্যাগ করেন। ঐ সময়ে কলিকাতার সুপ্রিম-কোর্টের চিফ জষ্টিস্ সার জেম্স্ কল্‌বিন্‌ সাহেব মহোদয়, তৎকালীন শিক্ষাসমাজের প্রেসিডেণ্ট ছিলেন। ইনি অগ্রজকে অত্যন্ত ভাল বাসিতেন; একারণ, অগ্রজকে বলেন, “তুমি যেরূপ হিন্দু-ল (আইন) অবগত আছ, উকীল হইলে তোমার আরও প্রতিপত্তি হইবে।” ইহা শুনিয়া অগ্রজ তাঁহাকে বলেন যে, “আমি ইংলাজী আইন জানি না, আর এ বয়সে আইন পরীক্ষা দিতেও ইচ্ছা নাই।” তাহাতে চিফ জষ্টিস্ বলেন যে, “তোমার মত অদ্বিতীয় বুদ্ধিমান্‌, দেশহিতৈষী, বিদ্যোৎ-