পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

স্বাধীনাবস্থা।

 যে সকল বালিকাবিদ্যালয়, ছোট লাট হেলিডে সাহেবের বাচনিক আদেশে স্থাপন করিয়াছিলেন, সেই সকল বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন ন্য়ূনাধিক চারি সহস্র টাকা স্বয়ং ঋণ করিয়া প্রদান করেন। অতঃপর অধিকাংশ বালিকাবিদ্যালয় উঠাইয়া দিয়া, নদীয়া, বর্দ্ধমান, মেদিনীপুর ও হুগলি জেলার অন্তঃপাতী বীরসিংহ, রামজীবনপুর, উদয়রাজপুর, গোবিন্দপুর, ঈড়পালা, কুরাণ, যৌগ্রাম প্রভৃতি গ্রামে প্রায় ২০টী বালিকাবিদ্যালয় স্থায়ী করেন, এবং ঐ সকল বিদ্যালয়ের ব্যয় স্বয়ং ও নিম্নলিখিত ব্যক্তিদের সাহায্যে নির্ব্বাহ করিতেন। মহানুভবেরা উক্ত বালিকাবিদ্যালয়ে সাহায্য দান করিতেন, তাঁহাদের নাম এই—তৎকালীন গবর্ণর জেনেরালের পত্নী লেডি ক্যানিং, হোমডিপার্টমেণ্টের সেক্রেটারি সিসিল বীড়ন ও তৎকালীন কৌন্সেলের মেম্বর গ্রাণ্ট ও গ্রে সাহেব প্রভৃতি এবং রাজা প্রতাপচন্দ্র সিংহ ও চক্‌দিঘীনিবাসী বাবু সারদাপ্রসাদ সিংহ প্রভৃতি। এই সকল মহোদয়েরা ভারতবর্ষের কামিনীগণের ভাবীহিতকামনায় বালিকাবিদ্যালয়ের সাহায্যার্থ প্রতি মাসেই অগ্রজ মহাশয়ের নিকট নিয়মিত টাকা প্রেরণ করিতেন। কতিপয় বৎসর উক্তরূপ সাহায্যেই বালিকাবিদ্যালয় সকল চলিয়া আসিতেছিল। পরে অগ্রজ মহাশয়, তৎকালীন ছোট লাট গ্রাণ্ড্‌, সাহেবের অনুরোধের বশবর্ত্তী হইয়া, গবর্ণমেণ্টের প্রদত্ত অর্দ্ধেক চাঁদা গ্রহণ করিয়া ব্যয়নির্ব্বাহ করিতেন। অনন্তর ক্রমশঃ কলিকাতার সন্নিহিত উপনগরে বালিকাবিদ্যালয় সকল স্থাপিত হইতে লাগিল। প্রথমতঃ ভারতবর্ষে বালিকাবিদ্যালয় প্রচলনজন্য হিন্দুদিগের মধ্যে অগ্রজই প্রধান উদ্যোগী ছিলেন। অতঃপর স্ত্রীশিক্ষা-বিষয়ে দেশীয় অন্যান্য সন্ত্রান্ত লোকের পূর্ব্বের ন্যায় ঘৃণা বা দ্বেষ রহিল না; সকলেই স্বীয় স্বীয় দুহিতা প্রভৃতিকে বিদ্যালয়ে পাঠাইতে লাগিলেন। অবশেষে কলিকাতার দলপতিগণও বেথুন-