পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৪
বিদ্যাসাগর-জীবনচরিত।

টাকা ও অন্য এক ব্যক্তির নিকট পঞ্চবিংশ সহস্র মুদ্রা সংগ্রহ করিয়া টাকা দিতে যাইলে, উক্ত রায় মহাশয় টাকা গ্রহণ করিতে অস্বীকৃত হইলেন। কারণ, তিনি উহাঁদের জমিদারী লাইব, এরূপ দৃঢ়সংকল্প করিয়াছিলেন। সুতরাং অগ্রজ মহাশয়, সুইনহো লা-কোম্পানির বাটীতে গতিবিধি করিয়া, অবিলম্বে টাকা জমা দিয়া, উহাদিগকে রমাপ্রসাদ বাবুর নিকট ঋণদায় হইতে মুক্ত করিয়া দেন। অগ্রজ মহাশয়, রাধানগরের চৌধুৱী-বাবুদের জমিদারী রক্ষার জন্য, ক্রমিক ছয় মাস কাল অনন্যকর্ম্মা ও অনন্যমনা হইয়া, নানা স্থানে নিজের প্রায় দুই সহস্র মুদ্রা ব্যয় করিয়া কৃতকার্য্য হইয়াছিলেন। তিনি রমাপ্রসাদ বাবুর হস্ত হইতে উহাদিগকে পরিত্রাণ করিয়া, দেশস্থ সাধারণের নিকট বিলক্ষণ প্রশংসাভাজন হইয়াছিলেন; কিন্তু এইজন্য তদবধি বাবু রমাপ্রসাদ রায়ের সহিত অগ্রজের মনান্তর ঘটিয়াছিল। অতঃপর কয়েক বৎসর চৌধুরী-বাবুরা পরম-সুখে কালাতিপাত করেন। দুঃখের বিষয় এই, ভ্রাতৃবিরোধ ও সুবন্দোবস্ত না হওয়াতে, রীতিমত ঋণ পরিশোধ না হইয়া, দুই এক মহাজন পরিবর্ত্তনের পর, ঐ সম্পত্তি ক্রোক নীলামে বিক্রয় হয়। তন্নিবন্ধন উহাদের কষ্ট উপস্থিত হইলে, মৃত লক্ষ্মীনারায়ণ চৌধুরীর পত্নী ও সদানন্দ চৌধুরীর পত্নীকে মাসিক ব্যয়-নির্ব্বাহার্থ অগ্রজ মহাশয় প্রতি মাসে প্রত্যেককে গোপনভাবে ৩০৲ টাকা করিয়া মাসহরা প্রেরণ করিতেন। কিছুদিন পরে মোনপুরের কাশীনাথ ঘোষ ৮০০৲ শত টাকার জন্য উক্ত চৌধুরীর নামে অভিযোগ করিয়া বসতবাটী ক্রোক করিলে, আমি, অগ্রজ মহাশয় ও উহাঁদের অনুরোধে, কাশীনাথ ঘোষের সহিত ১৫০৲ টাকায় রফা করিয়া, দাদার নিকট হইতে ঐ টাকা লইয়া, উক্ত বিষয় খোলসা করিয়া দিয়াছিলাম।

 ঐ বৎসর পিতৃদেব মহাশয়, দীনবন্ধু কুম্ভকারকে সমভিব্যাহারে লইয়া, পদব্রজে তীর্থপর্য্যটনে প্রস্থান করেন। তৎকালে পশ্চিমাঞ্চলে রেলওয়ে হয় নাই। এক বৎসর কাল সকল তীর্থ পরিভ্রমণ করিয়া, পরিশেষে পুষ্কর তীর্থ হইতে অগ্রজকে এক পত্র লিখেন যে, তুমি আমার বংশে রামাবতার, তোমার