পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৬
বিদ্যাসাগর-জীবনচরিত।

কথা উত্থাপন করিয়া, ঐ ষ্টেটের বর্তমান শোচনীয় অবস্থা বর্ণনা করিলেন। ইহা শ্রবণ করিয়া লেপ্টেনেণ্ট গবর্ণর বাহাদুর বলিলেন, “তোমার মত বন্ধু থাকিতে তাহাদিগের এরূপ শোচনীয় অবস্থা হওয়া, তোমার পক্ষে দূষণীয়। তুমি কিরূপে এতদিন ঐ সকল বিষয়ে উপেক্ষা করিয়া, তাহাদিগকে ঋণগ্রস্ত হইতে দেখিলে?” তদুত্তরে তিনি বলিলেন, “তাঁহাদের সময়দোষে ও কর্ম্মদোষে বিষয়-কর্ম্ম-সম্বন্ধে সকল সময়ে আমার কথা না শুনিয়া, তাঁহারা ভোগবাসনারই অনুবর্ত্তী হইয়াছিলেন এবং এক্ষণেও যেরূপ অবস্থা দেখিতেছি, তাহাতে আমার মতে এই বিষয় কোর্ট অব ওয়ার্ডে যাওয়া উচিত। তদ্ভিন্ন রক্ষার আর কোনও উপায় দেখি না। এ বিষয় আমার নিজের দ্বারা রক্ষা হওয়ার সম্ভাবনা অতি অল্প; আপনি নাবালকদের প্রতি দয়া ও অনুগ্রহ প্রকাশ করিয়া, আপনারই একমাত্র কর্ত্তব্যকর্ম্ম বিবেচনায়, সমস্ত ক্লেশ স্বীকার করিয়া, এই বিষয়ের ভার গ্রহণ করুন। এ বিষয়ে নাবালকদের প্রপিতামহী রাণী কাত্যায়নীয় সম্মতি করিয়া দিব, তদ্বিষয়ে কোন দ্বিধা করিবেন না; কারণ, রাণী কাত্যায়নী, আমাকে এ বিষয়ের কর্ত্তব্যাবধারণের ভার দিয়াছেন। রাজপুত্রদিগকে সমভিব্যাহারে করিয়া আপনার নিকট উপস্থিত হইলে, আপনি তাহাদের সমক্ষে আমাকে এইরূপ তিরস্কার করিবেন। এইরূপে নানাপ্রকার উপায় উদ্ভাবন করিয়া, পাইকপাড়া রাজ-ষ্টেট্, কোর্ট অব ওয়ার্ডে দিবার ব্যবস্থা করুন।” এই কথার পর দাদা, রাণী কাত্যায়নীর সমক্ষে গমন করিয়া বলিলেন, “এক্ষণে আমি রাজপুত্রদিগকে সমভিব্যাহারে করিয়া লেপ্টেনেণ্ট গবর্ণরের নিকট যাইব।” এই কথাগুলি বলিবামাত্র অন্য কথার অপেক্ষা না করিয়া রাণী বলিলেন, “তদ্বিষয়ে আমার সন্মতির আবশ্যক নাই। তুমি যাহা ভাল বুঝিবে, তাহাই করিবে।” অগ্রজ মহাশয়, রাজপুত্রদিগকে সমভিব্যাহারে লাইয়া, লেপ্টেনেণ্ট গবর্ণর বাহাদুরের সমীপে উপস্থিত হইলেন। লেপ্টনেণ্ট গবর্ণর বাহাদুর, সমাদরে সকলকে বসাইয়া, কুমার গিরিশচন্দ্র সিংহ বাহাদুরকে সম্বোধন করিয়া বলিলেন, “পণ্ডিত বিদ্যাসাগর তোমাদের পিতৃবন্ধু; ইনি