পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বাধীনাবস্থা।
১৭৭

থাকিতে তোমাদের বিষয়কর্ম্মের বিশৃঙ্খলা ঘটবার কারণ কি?” এই কথা বলিয়া অগ্রজকে বলিলেন, “পণ্ডিত! আমার বোধ হয়, তুমি নিজ কর্ম্মে ব্যস্ততাপ্রযুক্ত তোমার বন্ধুদিগের প্রতি উপেক্ষা করিয়া, তাহদের বিষয়কর্ম্মের অনুসন্ধান না লওয়ায় এবং তোমার পরমবন্ধু প্রতাপচন্দ্র সিংহকে সদুপদেশ প্রদান ও শাসন না করায়, তাঁহাদিগকে ঋণগ্রস্ত হইতে হইয়াছে এবং তাঁহাদিগের বিষয়কর্ম্মের বিশৃঙ্খলা ঘটিয়াছে। এতদ্ভিন্ন তাঁহাদিগের কর্ম্মচারিগণের কার্য্য ও ব্যবহারে তুমি রীতিমত দৃষ্টি রাখ নাই বলিয়া, ঐ কর্ম্মচারীরা ইহাঁদিগের যথেষ্ট ক্ষতি করিয়াছে। অতঃপর ইহাঁদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি না রাখিলে, তোমাকে ইহাঁদিগের পিতৃবন্ধু বলিতে পারি না।” এইরূপ নানাপ্রকার তিরস্কার করিবার পর, সাহেব স্বীকার করিলেন যে, তিনি পাইকপাড়ার রাজ-ষ্টেট্ তাঁহার সাধ্যানুসারে কোর্ট অব্ ওয়ার্ডে সমর্পণ করিবার চেষ্টা পাইবেন। এই বলিয়া তাঁহাকে ও রাজপুত্রদিগকে বিদায় দিলেন।

 তিনি বিদায় লইয়া রাজকুমারগণের সহিত বাসায় আসিয়া, তাঁহাদিগকে পাইকপাড়ায় পাঠাইয়া দিলেন। রাজকুমারগণ, রাণী কাত্যায়নীকে ছোট লাট ও বিদ্যাসাগরের কথোপকথনগুলি আনুপুর্ব্বিক বর্ণন করিলেন। তচ্ছ্রবণে রাণী সমধিক যত্ন ও আগ্রহাতিশয়-সহকারে দাদাকে পাইকপাড়ার বাটীতে লইয়া গেলেন। রাণী কাত্যায়নী তাঁহাকে বলিলেন, “বিদ্যাসাগর বাবা! তোমা ভিন্ন আর কে আমাদিগের প্রতি এরূপ যত্ন ও স্নেহ করিয়া আমাদিগের বিষয় রক্ষা করিবে? তুমি বই আর আমাদের হিতৈষী কেহই নাই।” পরে বিদ্যাসাগর মহাশয়, বাবু দ্বারকানাথ মিত্র ও ছোট লাটের পরামর্শে চব্বিশপরগণার কালেক্টার সাহেবের নিকট আবেদন করায়, তিনি তাহাতে নিজের মন্তব্য লিখিয়া, কমিসিনর সাহেবের নিকট প্রেরণ করেন। কমিসনর সাহেব, তাঁহার রিরুদ্ধে অভিপ্রায়সহ বোর্ডে প্রেরণ করায়, তৎকালীন অন্যতর মেম্বার ড্যাম্পিয়ার সাহেব, ঐ আবেদন-পত্র অগ্রাহ করিয়া, কমিসনর সাহেবের হাত দিয়া কালেক্টর সাহেবের নিকট প্রেরণ করেন। ইহা অবগত হইয়া, উহাঁরা তিন

১২