পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮৪
বিদ্যাসাগর-জীবনচরিত।

তজ্জন্য লোকনাথবাবু, ঐ সাহেবের প্রিয়পাত্র হইয়াছিলেন এবং সাহেব চাঁদা সংগ্রহ করিয়া, একটি দাতব্য হোমিওপ্যাথি চিকিৎসালয় স্থাপন করিয়া, উক্ত লোকনাথবাবুকে চিকিৎসক নিযুক্ত করেন। পরে কাশীতে লোকনাথবাবুর নিকট অনেকেই চিকিৎসা শিক্ষা করিয়া, নানাস্থানে যাইয়া চিকিৎসা-ব্যবসায়ে প্রবৃত্ত হন।

 সুপ্রসিদ্ধ সি, আই, ই, ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকার মহাশয়ের প্রথমে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় আস্থা ছিল না। কিন্তু উক্ত মহেন্দ্রবাবু মধ্যে মধ্যে ভাবিতেন, বিদ্যাসাগর মহাশয় ভারতে অদ্বিতীয় ব্যক্তি হইয়াও হোমিওপ্যাথির এত গোঁড়া কেন? এক দিবস অগ্রজের সহিত অনেক বাদানুবাদের পর, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা কিরূপ, তাহা পরীক্ষা করিবার জন্য তাঁহার নিকট স্বীকার করেন। এক দিবস মহেন্দ্রবাবু ও দাদা ভবানীপুরে অনারেবল বাবু দ্বারকানাথ মিত্র মহোদয়কে দেখিতে গিয়াছিলেন। তথা হইতে উভয়ে বাটী আসিবার সময় এক শকটে আইসেন। আমিও উহাঁদের সমভিব্যাহারে ছিলাম। গাড়ীতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা-উপলক্ষে ভয়ানক বাদানুবাদ হইতে লাগিল; দেখিয়া শুনিয়া আমি বলিলাম, “মহাশয়! আমাকে নামাইয়া দেন। আপনাদের বিবাদে আমার কর্ণে তালা লাগিল।” পরিশেষে উহাঁদের স্থির হইল যে, মহেন্দ্রবাবু পরীক্ষা না করিয়া, কথায় বিশ্বাস করিবেন না। অনন্তর মহেন্দ্রবাবু, দিন কয়েক পরীক্ষা করিয়া বুঝিতে পারিলেন যে, বর্ত্তমান যাবতীয় চিকিৎসা-প্রণালীর মধ্যে হোমিওপ্যাথি-চিকিৎসা উৎকৃষ্ট; এই বিবেচনায় মহেন্দ্রবাবু এলোপ্যাথি চিকিৎসা পরিত্যাগ করিয়া, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করিতে আরম্ভ করেন। কলিকাতার মধ্যে মহেন্দ্রবাবুই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় সর্বাপেক্ষা প্রতিপত্তি ও সুখ্যাতি লাভ করিয়াছিলেন।

 বিদ্যাসাগর মহাশয়, প্রতি বৎসর থ্যাকার কোম্পানির দ্বারা অর্ডার দিয়া, বিলাত হইতে অনেক টাকার হোমিওপ্যাথিক পুস্তক আনাইয়া প্রচারজন্য অনেককে বিনামূল্যে বিতরণ করিয়াছেন। খৃঃ ১৮৭৭ সাল হইতে প্রতি