পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/২১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বাধীনাবস্থা।
২০৭

ঐ সকল লোককে সম্মত করাইতেন। সামান্য ব্যক্তিরা নিরুপায় হইয়া, বিদ্যাসাগর মহাশয়কে জানাইয়া, সম্মুখে দণ্ডায়মান রহিল। ন্যায়বিরুদ্ধ কার্য্য হইতেছে অবগত হইয়া, তিনি খড়ার গ্রামে সমাগত আসেসর রমেশবাবুর নিকট যাইয়া বলেন, “ভিন্ন ভিন্ন ব্যবসায়ী ব্যক্তিদিগকে একব্যবসায়ী লিখিয়া ট্যাক্স ধার্য্য করিলে অতি অন্যায় কার্য্য হয়।” রমেশবাবু বলিলেন, “দুই নামে এক কাগজে এক বিলে না দিলে, অনেক সামান্য আয়ের ব্যবসায়ী লোক বাদ পড়ে, এরূপ হইলে গবর্ণমেণ্টের আয়ের অনেক খর্ব্বত হয়।” অগ্রজ মহাশয়, আসেসর বাবুকে বলেন যে, “গবর্ণমেণ্টের আয়ের লাঘব হয় বলিয়া, এরূপ অন্যায় কার্য্যে প্রবৃত্ত হওয়া কি আপনাদের উচিত হইতেছে?” রমেশবাবু, অগ্রজ মহাশয়ের উপদেশ অগ্রাহ করিয়া, তৎকালে তাঁহার নিকট উপস্থিত কতকগুলি সামান্য আয়ের ব্যবসায়ীকে ধমকাইয়া স্বীকার করাইলেন। মফঃস্বলে এরূপ আইনবিরুদ্ধ কার্য্য দেখিয়া, অবিলম্বে অগ্রজ মহাশয় কলিকাতায় আসিয়া লেপ্টেনেণ্ট গবর্ণরের কর্ণগোচর করিলেন, এবং স্বয়ং দেশস্থ লোকের হিতকামনায় বাদী হইলেন। লেপ্টেনেণ্ট গবর্ণর বাহাদুর, অগ্রজ মহাশয়ের প্রমুখাৎ উহা শ্রবণ করিয়া, কৃষ্ণনগরের মাজিষ্ট্রেট্ মনরো সাহেবের কথা বলেন; কিন্তু অগ্রজ মহাশয়, হেরিসন সাহেবকে মনোনীত করেন। তদনুসারে ছোট লাট বাহাদুর, বৰ্দ্ধমানের কালেক্টার হেরিসন সাহেব বাহাদুরকে কমিসনার নিযুক্ত করিয়া, মফঃস্বল তদন্ত জন্য প্রেরণ করেন। হেরিসন সাহেব, বাদী অগ্রজ মহাশয়ের সমভিব্যাহারে খড়ার, রাধানগর, ক্ষীরপাই, চন্দ্রকোণা, রামজীবনপুর, বদনগঞ্জ, জাহানাবাদ প্রভৃতি গ্রামে যাইয়া, সকল ব্যবসায়ীর খাতা ও কাগজপত্র অবলোকন করেন ও আসেসর রমেশবাবুর কৃত অন্যায় প্রমাণ হয়। অগ্রজ মহাশয়, বিপদগ্রস্ত দেশস্থ সাধারণের উপকারের জন্য, প্রায় দুই মাস কাল অনন্যকর্ম্ম ও অনন্যমনা হইয়া, কেবল এই কার্য্যেই লিপ্তছিলেন। একারণ দেশস্থ লোক উপকার প্রাপ্ত হইয়া, অগ্রজ মহাশয়ের বিশিষ্টরূপ গুণানুবাদ করেন। উহারা পুর্ব্বে মনে করিত যে, বিদ্যাসাগর