পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/২২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বাধীনাবস্থা।
২১৭

নারায়ণের বিধবাবিবাহ।

 সন ১২৭৭ সালের ২৭শে শ্রাবণ বৃহস্পতিবার অগ্রজ মহাশয়ের একমাত্র পুত্র শ্রীযুক্ত নারায়ণচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, খানাকুলকৃষ্ণনগরনিবাসী শম্ভুচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের বিধবা-তনয়া শ্রীমতী ভবসুন্দরী দেবীর পাণিগ্রহণ করিয়াছেন। অগ্রজ মহাশয়, বিধবাবিবাহের প্রবর্ত্তক; এতাবৎকাল উদেযাগ করিয়া, সর্ব্বস্বান্ত হইয়া, অন্যান্য লোকের বিধবাবিবাহ দিয়া আসিতেছিলেন; আমাদের বংশে অদ্যাপি বিবাহের কারণ ঘটে নাই। এই জন্য সকল স্থানের লোকেই বলিত, বিদ্যাসাগর মহাশয় পরের মাথায় কাঁঠাল ভাঙ্গেন, নিজের বেলায়, ঠিক আছেন। এক্ষণে তাঁহার পুত্র নারায়ণের বিবাহ হওয়ায়, অগ্রজ মহাশয়কে আর কাহারও নিকট নিন্দার ভাজন হইতে হইল না। ঐ পাত্রীর জননী সারদাদেবী অতিশয় বুদ্ধিমতী। স্বীয় কন্যার পুনর্ব্বার বিবাহ দিয়া নিশ্চিন্ত হইয়া কাশীবাস করিবার মানসে, প্রথমতঃ আমার নিকট আগমন করেন। ইনি নিকষ কুলীনের বংশোদ্ভবা কন্যার মাতুল, চন্দ্রকোণানিবাসী নীলরতন চট্টোপাধ্যায়। কন্যার প্রথম বিবাহ কৃষ্ণনগরের বিখ্যাত বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়দের বাটীতে হইয়াছিল। উক্ত সারদাদেবী, তনয়াসহ বীরসিংহায় আমার বাটীতে আগমন করিয়া, আমাকে উহার বিবাহের কথা ব্যক্ত করেন। তাঁহাদিগকে আমার বাটীতে রাখিয়া, অগ্রজকে ঐ সংবাদ দিই। অগ্রজ মহাশয়, অন্য এক পাত্র স্থির করিয়া, কিছুদিন পরে আমায় পত্র লিখেন, “তুমি ঐ পাত্রীসহ পাত্রীর মাতাকে প্রেরণ করিবে।” ইতিমধ্যে নারায়ণ বাবাজী, কোন কার্য্যোপলক্ষে বীরসিংহায় আসিয়া, কথাবার্ত্তাতে পরম প্রীতিলাভ করিয়া, আমার নিকট নিজের বিবাহের অভিপ্রায় প্রকাশ করেন। কিন্তু জ্যেষ্ঠাবধু দেবী প্রভৃতি এ বিষয়ে অসন্মতি প্রকাশ করায়, উভয় পক্ষের মন্তব্য-পত্র-সঙ্গ ঐ পাত্রী ও উহার মাতাকে কলিকাতায় অগ্রজের নিকট পাঠাইয়া দিয়াছিলাম। কয়েক দিন পরে নারায়ণও কলিকাতায় গমন করে। পরে এই পরিণয়