আহ্বান করিতেন। বাচস্পতি মহাশয়, অগ্রজকে আন্তরিক ভাল বাসিতেন ও অদ্বিতীয় বুদ্ধিমান্ ছাত্র বলিয়া শ্রদ্ধা করিতেন। তিনি সন্তুষ্ট হইবেন বলিয়া, বাচস্পতি মহাশয়, আমাদিগকে প্রত্যহ কাছে বসাইয়া সন্ধি জিজ্ঞাসা করিতেন। বাচস্পতি মহাশয়ের পত্নী কালগ্রাসে নিপতিত হইলে, কিয়দিবস পরে তিনি বৃদ্ধ-বয়সে পুনর্ব্বার বিবাহ করিবার জন্য বিলক্ষণ যত্ন পাইতে লাগিলেন। বিবাহ করা উচিত কি না, এই বিষয়ে একদিন নির্জ্জনে অগ্রজের সহিত পরামর্শ করেন। তিনি বলিলেন, “এরূপ বয়সে মহাশয়ের বিবাহ করা পরামর্শসিদ্ধ নয়।” বাচস্পতি মহাশয় তাঁহার পরামর্শ কোনরূপে শুনিলেন না। একারণ তিনি রাগ করিয়া, বাচস্পতি মহাশয়ের বাটী যাইতেন না। বাচস্পতি মহাশয়, তৎকালে কলিকাতার অদ্বিতীয় ধনশালী ও সন্ত্রান্ত রামদুলাল সরকারের পুত্র ছাতু বাবু ও লাটু বাবুর দলের সভাপণ্ডিত ছিলেন। নড়ালের রামরতন বাবুও বাচস্পতি মহাশয়কে অতিশয় মান্য করিতেন। ইহাঁরা উভয়ে ঐক্য হইয়া সম্বন্ধ স্থির করিয়া, এক পরমাসুন্দরী কন্যার সতিত বাচস্পতি মহাশয়ের বিবাহ কার্য্য সমাধা করান। বাচস্পতি মহাশয়, অগ্রজকে সুতনির্ব্বিশেষে স্নেহ করিতেন; এজন্য এক দিবস বলেন, “ঈশ্বর! তোমার মাকে এক দিনও দেখিতে গেলে না।” ইহা শুনিয়া তিনি রোদন করিতে লাগিলেন। পরে এক দিন জোর করিয়া, দাদাকে তাঁহার বাটীতে লইয়া যান। বাচস্পতি মহাশয়ের নূতন বিবাহিতা পত্নীকে দেখিবামাত্র অগ্রজ রোদন করিতে লাগিলেন। বাচস্পতি মহাশয় তাঁহাকে অনেক উপদেশ দিয়া সান্ত্বনা করেন। ইহার কিছু দিন পরেই বাচস্পতি মহাশয় পরলোকগমন করেন। অগ্রজ, শম্ভুনাথ বাচস্পতির দেশস্থ কোন লোককে দেখিলেই তাহাকে শ্রদ্ধা ও ভক্তি করিতেন।
১৮৩৮ খৃষ্টাব্দে এই নিয়ম হইয়াছিল যে, স্মৃতি, ন্যায়, বেদান্ত এই তিন প্রধান শ্রেণীর ছাত্রদিগকে বাৎসরিক পরীক্ষার সময়ে সংস্কৃত গদ্য ও পদ্য রচনা করিতে হইবে। যাহার রচনা সর্ব্বাপেক্ষা ভাল হইবে, সে গদ্য-রচনায়