পাতা:বিপ্লবী কানাইলাল - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তাহলে তাঁরও যেন শাস্তি হয়—সে শাস্তি দ্বীপান্তরই হোক আর সামান্য কারাদণ্ডই হোক।

 জেলের মধ্যে তাঁদের ওপর বেশ উৎপীড়ন চলে। নানা চেষ্টায় তাঁদের ভেতরের কথা জানবার চেষ্টা করতে থাকে পুলিস। নাওয়া খাওয়ারও কষ্ট। কারও ভাগ্যে একটু মুড়ি, কারও ভাগ্যে একটু খিচুড়ি। অধিকাংশ সময়েই অনাহার। যে ঘরে থাকা সে ঘরেই একপাশে একটি গামলায় শৌচ ব্যবস্থা। সে অবস্থা কল্পনাতীত।

 প্রথম প্রথম সকলকে আলাদা আলাদা রাখা হত। পরে একত্র রাখার ব্যবস্থা হল। একত্র থাকায় অত দুঃখের দিনে সকলে মহা আনন্দে দিন কাটাতেন। খাওয়া দাওয়া, হৈহুল্লোড়, তর্ক-বিতর্ক—সারাদিন গুলজার। হেমচন্দ্র ছিলেন সবার প্রিয় হেমদ। ইনি ভাল রাঁধতে পারতেন। নাচগানেরও অভাব ছিল না। হেমচন্দ্র, দেবব্রত ও উল্লাসকর ভাল গাইতে পারতেন। শচীন সেন গাইতে না পারলেও রাত বারোটা পর্যন্ত তার সঙ্গীত সাধনা সকলকে অস্থির করে তুলত। তাছাড়া বাগানের আম কাঁটাল চুরি করা ছিল তাঁর এক খেলা। রবিবারের আসর আরও জমে উঠত। কারণ সেদিন অনেকেরই আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধব দেখা করতে আসতেন, কাজেই নানারকম খবর আসত আর সেই সঙ্গে মিষ্টান্ন। তখনকার দিনে এই দিক থেকে জেলের নিয়মের বিশেষ কড়াকড়ি ছিল না।

৬৯