পাতা:বিপ্লবী কানাইলাল - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পরে বারীন্দ্রের কাছে তার নাম জেনে তাকে গ্রেপ্তার করে। বারীন্দ্র দেশের সামনে উচ্চ আদর্শ স্থাপনের জন্য, হাসিমুখে মৃত্যুবরণ করবার জন্য নিজের ইচ্ছামত সাজিয়ে-গুজিয়ে, কমিয়ে-বাড়িয়ে সব কথা বলেছেন আর নরেন গোসাইঁ ফাঁসির ভয়ে নিজেকে বাঁচাবার জন্যে রাজ-সাক্ষী হয়ে সব কথা হুবহু বলে দিয়েছে পুলিসের কাছে। ফলে পুলিসের অনেক সুবিধে হয়ে গেল। দলের সর্বনাশ হল। এখানেই বারীন্দ্রের স্বীকারোক্তি ও নরেনের স্বীকারোক্তির পার্থক্য।

 ১৯শে মে মিঃ বার্লির কোর্টে ওঁদের বিচার আরম্ভ হল। এই বিচার ১১ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলেছিল। বিচার দু’চারদিন চলবার পরই নরেন গোসাইঁ সরকারী সাক্ষী (approver) হয়ে কাঠগড়ায় গিয়ে দাঁড়াল। হেমচন্দ্র লিখছেন, ‘আমাদের গ্রেপ্তারের প্রায় তিন সপ্তাহ পরে একদিন শোনা গেল, নরেন গোসাইঁর সঙ্গে প্রতিদিন তিন চার ঘণ্টা করে সপার্ষদ পুলিস সাহেবের আর নরেনের বাবার, দরজা বন্ধ করে গোপনে কি পরামর্শ চলছে। তখন আর আমাদের বুঝতে বাকী রইল না যে, নরেন আমাদের বিরুদ্ধে রাজার সাক্ষী অর্থাৎ approver হতে যাচ্ছে। আমাদের যত রাগ, দ্বেষ, ঘৃণা, সবই গিয়ে পড়ল নরেন, তার বড়লোক বাবা আর গুরু গোসাইঁদের ওপর।’

 প্রথমদিকে পুলিস নরেনকে আলাদা রাখবার ব্যবস্থা করেছিল। তারপর কিছুদিন ওদের সকলের সঙ্গে রেখেছিল যদি গল্পের ভেতর দিয়ে নরেন আরও কিছু জানতে পারে।

৭৩