পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৯).pdf/২৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀեrՀ fofox अरङ–ीि अन्न বহুবিবাহ যে সমাজের অনিষ্টকারক, সকলের বর্জনীয়, এবং স্বাভাবিক নীতিবিদ তাহা বােধ হয় ঐ দেশের জনসাধারণের হৃদয়ঙ্গম হইয়াছে। সুশিক্ষিত বা অল্পশিক্ষিত এ দেশে এমত লোক বোধ হয় অল্পই আছে, যে বলিবে, “বহুবিবাহ অতি সুপ্ৰথা, ইহা ত্যাজ্য নহে।” র্যাহারা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পুস্তকের প্রতিবাদ করিয়াছেন, বোধ হয়, র্তাহাদেরও এই মাত্ৰ উদ্দেশ্য যে, তাহারা আপন আপন জ্ঞানমত বহুবিবাহের শাস্ত্রীয়তা প্ৰতিপন্ন করেন। তঁহাদের প্রণীত গ্ৰন্থ আমরা সবিশেষ পড়ি নাই, কিন্তু বোধ হয় তাহারা কেহই বলেন না যে, বহুবিবাহ সুপ্ৰথা, ইহা তোমরা ত্যাগ করিও না। যদি কেহ এমত কথা বলিয়া থাকেন, তবে ইহা বলা যাইতে পারে যে, তাহার মত কুসংস্কারবিশিষ্ট লোক এক্ষণে অতি অল্প। যাহারা স্বয়ং বহুবিবাহ করিয়া থাকেন, তাহাদিগেরই মুখে বহুবিবাহপ্রথার ভূয়সী নিন্দ এবং কৌলীন্যের উপর ধিক্কার আমরা শতবার শুনিয়াছি। তবে যে তাহারা কেন এত বিবাহ করেন, সে স্বতন্ত্র কথা। এমত চোর কেহই নাই যে, জিজ্ঞাসা করিলে, চুরিকে অসৎকৰ্ম্ম বলিয়া স্বীকার করিবে না-কিন্তু অসৎকৰ্ম্ম বলিয়া স্বীকার করিয়াও সে আবার চুরি করে। কুলীনেরাও বহুবিবাহ নিন্দনীয় বলিয়া স্বীকার করিয়াও বহুবিবাহ করেন। কিন্তু সে যাহাই হউক, বহুবিবাহ যে কুপ্ৰথা, তদ্বিষয়ে বাঙ্গালীর মতৈক্য সম্বন্ধে আমাদের কোন সংশয় নাই এই ঐকমত্য যে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের কৃত বহুবিবাহবিষয়ক প্ৰথম পুস্তক প্রচারের পর হইয়াছে, এমত নহে। অনেক দিন হইতেই ইহা সংস্থাপিত হইয়া আসিতেছে । ইহা দেশের মধ্যে সুশিক্ষা প্রচার বা ইউরোপীয় নীতির প্রচার বা সাধারণ উন্নতির ফল । তথাপি তাহার প্রথম পুস্তকের জন্য আমরা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নিকট কৃতজ্ঞ। যাহা কিছু সদভিপ্ৰায়ে অনুষ্ঠিত, তাহ সাৰ্থক হউক বা নিরর্থক হউক, প্রয়োজনবিশিষ্ট হউক বা নিম্প্রয়োজনীয় হউক, তাহাই প্ৰশংসনীয় এবং কৃতজ্ঞতার স্থল। বিশেষ বহুবিবাহ সম্বন্ধে লোকের মত যাহাই হউক, বহুবিবাহপ্রথা দেশ হইতে একেবারে উচ্ছিন্ন হয় নাই। তবে বহুবিবাহ এ দেশে যত দূর প্রবল বলিয়া বিদ্যাসাগর প্রতিপন্ন করিবার চেষ্টা করিয়াছেন, বাস্তবিক ততটা প্ৰবল নহে। আমাদিগের স্মরণ হয়, হুগলি জেলায় যতগুলিন বহুবিবাহপরায়ণ ব্ৰাহ্মণ আছেন, বিদ্যাসাগর প্রথম পুস্তকে তাহাদিগের তালিকা দিয়াছেন। অনেকের মুখে শুনিয়াছি যে, তালিকাটি প্রমাদশূন্য নহে। কেহ কেহ বলেন যে, মৃত ব্যক্তির নাম সন্নিবেশ দ্বারা তালিকাটি স্ফীত হইয়াছে। আমরা স্বয়ং যে দুই একটির কথা সবিশেষ জানি, তাহা তালিকার সঙ্গে মিলে নাই। যাহা হউক, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের