পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/২৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

किझन्न लल *RSన ੋਲ੍ਹਿ • আরও দেখে আশ্চৰ্য্য হোল—ও ভাবচে, বীণার কোথায় বিয়ে হবে, কার ঘরে পড়বে অজ পাড়াগায়ে—এই বয়সে, গোয়াল, গরু, ধানসেদ্ধ, ভাত রণধতেই জীবনটা কাটাবে। যখন বাপের পয়সার জোর নেই, জীবনে কিছুই দেখবে না, শুনবে না। তার চেয়ে যদি ওকে বিয়ে করে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া যায়—থিয়েটার, বায়োস্কোপ, লোকজন—মাঝে মাঝে দোতলা বাসে করে কালীঘাট কি দক্ষিণেশ্বর, যা কখনো বীণা দেখেনি —কি খুশীই হবে বীণা ! জীবনে কখনো ওর হয়নি.রমা কলকাতার মেয়ে, কত দেখেচে, কত শুনেচে। তাকে আর নতুন কি দেখাবে ও। কিন্তু সহানুভূতি বা দুঃখ এক জিনিস আর তা থেকে কাজের প্রেরণা পাওয়া সম্পূর্ণ অন্ত— বিশেষতঃ স্বার্থপর যৌবন চায় যা নাগালের বাইরে তাকে হাতে আঁকড়ে ধরতে, চায় তার রূপ, চায় উন্নতি, ছোট চায় বড়কে আয়ত্ত করার আত্মপ্রসাদ– গোকুল বীণার চিন্ত মন থেকে ঝেড়ে ফেলে দিয়ে একটা সিগারেট ধরালে ।

কিন্নর দল

পাড়ায় ছ'সাত ঘর ব্রাহ্মণের বাস মোট । সকলের অবস্থাই খারাপ। পরস্পরকে ঠকিয়ে পরস্পরের কাছে ধার-ধোর করে এরা দিন গুজরান করে। অবিপ্তি কেউ কাউকে খুব ঠকাতে পারে না, কারণ সবাই বেশ হাঁশিয়ার। গরীব বলেই এর বেশী কুচুটে ও হিংসুক, কেউ কারো ভাল দেখতে পারে না, বা কেউ কাউকে বিশ্বাসও করে না । পূৰ্ব্বেই বলেচি, সকলের অবস্থা খারাপ এবং খানিকটা তার দরুন, খানিকটা অন্ত কারণে সকলের চেহারা খারাপ। কিশোরী মেয়েদেরও তেমন লালিত্য নেই মুখে, ছোট ছোট ছেলেরা এমম অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন থাকে এবং এমন পাক পাকা কথা বলে যে তাদের আর শিশু বা বালক বলে মনে হয় না। কাব্যে বা উপন্যাসে যে শৈশবকালের কতই প্রশস্তি পাঠ করা যায়, মনে হয় সে সব এদের জন্তে নয়, এর মাতৃগর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়ে একেবারে প্রবীণত্বে পা দিয়েছে। পাড়ায় একঘর গৃহস্থ আছে, তারা এখানে থাকে না, তাদের কোঠাবাড়িটা চাবি দেওয়া পড়ে আছে আজ দশ-বারো বছর । এদের মন্তবড় সংসার ছিল, এখন প্রায় সবাই মরে হেজে গিয়ে প্রায় পাচটি প্রাণীতে দাড়িয়েচে । বাড়ির বড় ছেলে পশ্চিমে চাকরি করে, মেজ ছেলে কলেজে পড়ে কলকাতায়, ছোট ছেলেটি জন্মাবধি কাল ও বোবা—পিসিমার কাছে থেকে মূকবধির বিদ্যালয়ে পড়ে। বড় ছেলে বিবাহ করেনি, যদিও তার বয়স ত্রিশ-বত্রিশ হয়েছে, সে নাকি বিবাহের বিরোধী, শোনা যাচ্ছে সে এমনি ভাবেই জীবন কাটাবে। পাড়ার মধ্যে এরাই শিক্ষিত ও সচ্ছল অবস্থার মানুষ। সেজন্তে এদের কেউ ভাল চোখে দেখে না, মনে মনে সকলেই এদের হিসে করে এবং বড় ছেলে যে বিয়ে করবে না বলছে, সে সংবাদে পাড়ার সবাই পরম সন্তুষ্ট । যখন সবাই ছোট ও গরীব, তখন একঘর লোক কেন এত বাড় ৰাড়বে ? বড় ছেলে বিয়ে করলেই ছেলেমেয়ে হয়ে জাজ্জ্বল্যমান সংসার হবে দু'দিন পরে, সে কেউ সহ করতে পারবে না । মেজ ছেলে মোটে কলেজে পড়ছে, এখন সাপ হয় কি ব্যাং হয় তার কিছু ঠিক নেই, তার বিষয়ে দুশ্চিন্তার এখনও কারণ ঘটেনি, তার বয়েসও বেশী নয়। মজুমদার-বাড়িতে ভাঙা রোয়াকে দুপুরে পাড়ার মেয়েদের মেয়ে-গজালি হয়। তাতে রায়