পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/২৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&Q○ विडूङिबध्नावली রাগ করো না ভায়া। যা সত্যি, তাই বল্লাম। চা এসেচে ? তাহলি একটা গল্প শোনো বলি। আমার নিজের চোখে দেখা । খুব বৃষ্টি এসে পড়লো, চারিদিক অন্ধকার করে এলো। কাশীনাথ কবিরাজ তার গল্প আরম্ভ করলো । fr কাশীনাথ কবিরাজ তান্ত্রিক-মতে চিকিৎসা করে বলে অনেক দূর দূর থেকে তার ডাক আসে। আজ বছর দশেক আগে হরিহরপুরের জমিদার শিবচন্দ্র মুখুজ্যের বাড়ি থেকে তার ছেলের চিকিৎসার জন্তে কাশীনাথের ডাক এলো । আমি বল্লাম—আগে কখনো সেখানে গিয়েছিলেন আপনি ? -नीं । —নাম জানতেন ? —খুব। আমাদের ওদেশে হরিহরপুরের জমিদারের নাম খুব প্রসিদ্ধ। —যথন গিয়ে পৌছলেন, তখন বেলা কত ? —সন্দের কিছু আগে । তারপর শোনে— কাশীনাথ ওদের বাড়ি দেখে অবাক হয়ে গেলো । সেকেলে নামকরা জমিদার, মস্ত বড় দেউড়ি, দু-তিন মহলা বাড়ি। দেউড়ির পাশে বৈঠকখানা ঘর, তার পাশে একটা বড় বারান্দা। ওদিকে ঠাকুর-দালান, বাইরে রাসমঞ্চ, দোলমঞ্চ। তবে এ সবই ভগ্নপ্রায়—পূর্বের সমৃদ্ধ ঘোষণা ক'রে দাড়িয়ে আছে মাত্র। বড় বড় বট-অশ্বথের গাছ গজিয়েছে বাড়ির গায়ে । মন্দিরের চুড়োর ফাটলে বন্ত শালিখের গৰ্ত্ত, কাঠবিড়ালির বাসা। সামনে বড় একটা আধ-মজা দীঘি পানায় ভৰ্ত্তি । সন্ধ্যার কিছু আগে সেই মস্ত বড় পুরনো ভাঙা বাড়ি দেখে কাশীনাথের মনে কেমন এক অপূৰ্ব্ব ভাব হোল । আমি বল্লাম—কি ভাব ? —সে তোমারে বলতে পারিনে, ভায় । ভয়ও না, আনন্দও না । কেমন যেন মনে হোল, এ বড় অপয়া বাড়ি—এ ভিটেতে পা না দেওয়াই ভালো আমার পক্ষি । তোমার হবে না, কিন্তু আমার হয় বাপু, এমনি । —অন্ত কোথাও হয়েচে ? —আরও দু-একবার হয়েচে এমনি । কিন্তু সে কথা এখন আনবার দরকার নেই। তারপর বলি শোনো না— তারপর কাশী কবিরাজ সেখানে গিয়ে রোগী দেখল। দশ বৎসর বয়সের একটি ছেলের টাইফয়েড জর, খুব সঙ্কটাপন্ন অবস্থা। কাশী কবিরাজ গিয়ে তান্ত্রিক প্রণালীতে ঝাড়-ফুক করে শেকড়-বাকড়ের ওষুধ বেটে খাওয়ালো। রোগী কথঞ্চিত মুস্থ হয়ে উঠলো। অনেক রাত্রে কাশী খাওয়া-দাওয়া সেরে দেউড়ির পাশে বৈঠকখানা ঘরে এসে দেখলো, সেখানে তার জন্তে শয্যা প্রস্তুত । উৎকৃষ্ট শয্য, দামী নেটের মশারি, কাসার গেলাসে জল ঢাকা আছে, ডিবের বাটিতে পান,—সব ব্যবস্থা অতি পরিপাটী। আমি বললাম—বড়লোকের বাড়ির বন্দোবস্ত— —হাজার হোক, বনেদী ঘর তো ? যতই অবস্থা খারাপ হোক, পুরনো চাল-চলন যাবে কোথায় ? --তারপর ? \