পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/৩৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ΦάΨ वेिङ्कडि-ब्रध्नांबलौ কাছারী ফিরচি ভাগলপুর থেকে। বাড়ি ফিরে এসে দেখি গালুডি মুদ্ধ মেয়ে পুরুষ একত্র হয়েচে—দোলের ভোজ হচ্চে, মাংস পোলাও কত কি আয়োজন। আমায় দেখে সবাই হৈ হৈ করে উঠল—Leader-এর এ কি ব্যাপার! এত রাত পৰ্য্যস্ত কোথায় ছিলেন ? --ইত্যাদি । খাওয়া-দাওয়া সেরে রাত বারোটায় রণচী এক্সপ্রেসে কলকাতা রওনা হই । আজ এত রাত পৰ্য্যন্ত বাইরে জেগে বসে থেকে জ্যোৎস্বাময়ী মুক্ত প্রান্তর ও দূরবর্তী শৈলমালার কি শোভাই যে দেখলুম, তা বর্ণনা করতে গেলেই ছোট হয়ে পড়ে। সে মহিমা ও সৌন্দৰ্য্য বর্ণনা করে বোঝাবার না। রাত্রে সারারাতই জ্যোৎস্নালোকিত শালবনের শোভা দেখতে দেখতে এলাম । খড়গপুর ছাড়িয়ে একটু ঘুমিয়েছিলাম। সেদিনই স্কুলের পর ভাটপাড়া গেলাম। রাত আটটার সময় ঘোড়ার গাড়ি করে ঘোষপাড়ায় দোল দেখতে গেলুম—সঙ্গে ছোট মামীম ও মাসীমা। বাল্যদিনে গরিফা হয়ে হালিশহর হেঁটে দু'একবার গিয়েছি, সে অনেককালের কথা। তারপর কতকাল পরে আবার গরিফা দেখলুম, হাজিনগর মিল দেখলুম, হালিশহরে পাম্প-ওয়ালা বাধা ঘাট ও ৮ঈশান মিত্রের বাড়ি দেখলুম। হালিশহরের বাজারের সেই সব সুপরিচিত গলি ও রাস্তা দেখতে দেখতে বাস ও কাচড়াপাড়া ছাড়িয়ে রাত প্রায় সাড়ে ন’টার সময় ঘোষপাড়ার মেলাস্থানে পৌছে গেলাম। মেলার স্থান, ডালিমতলা ইত্যাদি হয়ে পালেদের বাড়ির মধ্যে গেলুম, গোপাল পাল সেখানে মোহাস্ত সেজে বসে যাত্রীদের কাছে পয়সা আদায় করচে। নলে পালের সঙ্গে দেখা করতে গেলুম—সে এক সাহার কাপড় সংক্রান্ত কি মোকদ্দমার মীমাংসা আমায় করতে দিলে। আমি বল্লুম–ও সব এখন পারব না। মামার বাড়ি গিয়ে নিচুতলার দিকে দরজা খুলে ছাদের ওপর গিয়ে বসলুম। জ্যোৎস্না ফুট্‌ ! ফুট্‌ করচে ছাদের ওপরে। নীচের ছোট ঘরটা বা যে ঘরে গৌরী বসে পান সাজত—সে সব ঘর বেড়িয়ে এলুম। খুকুদের বাড়ির ছাদের মত—এই তো সবে রাত দশটা-হয়তো ন’দিদিদের বাড়ি সবাই গল্প করচে, কি তাস খেলচে । ছোট মামীম চ করচে, আমরা গল্প করতে করতে চা পান করলুম। পটলমামার এক ছোট মেয়ে বেড়াতে এল। রাত এগারোটার সময় মেয়েদের আলাপ শেষ হল, সবাই মিলে আবার এলুম দোলতলায়। কোথায় কাল এ সময়ে গালুড়িতে দোলের ভোজ চলচে, দুরে সিদ্ধেশ্বর ডুংরি ও কালাঝোর শৈলমাল ফুটফুটে জ্যোৎস্নায় অস্পষ্ট দেখাচ্চে— আর আজ কোথায় কোন পুরোনো স্মৃতি জড়ানো রাজ্যের বুকের মধ্যে এসে পড়েছি। রাত অনেক হয়েচে । শাস্তিদের দোকানে গিয়ে ওকে জাগিয়ে কদমা কিনে সবাই ঘোড়ার গাড়িতে এসে উঠলুম। - রাত দুটোতে ভাটপাড়া পৌছাই । ভাটপাড়া থেকে এলুম শুক্রবার সকালে, শনিবার গেলুম বনগ। এই সপ্তাহট অদ্ভুত ধরনের বেড়ানো হল, নানা বিচিত্র অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে। বনগী পৌঁছেই চলে গেলুম খয়রামারির মাঠে ও রাজনগরের বটতলাটাতে । মনে পড়ল আজ যখন বটতলার ঝুরি ঠেস দিয়ে বসে, সেদিন এমুনি সময় কুমীরমুড়ির জঙ্গলে সুবর্ণরেখার ওপারে ঠিক এম্নি একটা গাছ ঠেস্ দিয়ে বসেছিলুম—কিংবা তারও আগের দিন বাসাডেরার বন্য পথ দিয়ে গরুর গাড়ি করে গালুড ফিরচি। ওখানে কতক্ষণ বসে তারপর মাঠের মধ্যে এসে বসলুম। হু হু হাওয়া বইচে, রোপোড়া মাটির সোদা গন্ধে বাতাস ভরপুর। পরদিন সকালে উঠে বারাকপুর চলে গেলুম। খুকু রান্নাঘরে রাখচে, বেলা দশটা, আমি ইন্দুদের বাড়ি একটু বেড়িয়ে তারপর খুকুদের রান্নাঘরে গিয়ে ডাকচি, ও খুড়ীম, খুড়ীমা –খুকু