পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/২০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

సినe বিভূতি-রচনাবলী তাহাকে জলের পরিমাণ বুঝাইয়া দিতে সে মাটির হাড়িতে জল গরম করিয়া আনিল। তাহার ছোট বোন কয়েকটি পাথরবাটি আনিল। ভানুমতীকে চা খাইবার অনুরোধ করিলাম, সে খাইতে চাহিল না । জগরু পান্না পাথরের ছোট খোরার এক থোরা চ শেষ করিয়া আরও थॉनिकल्ले 5ांश्म्निां अश्ठ । চা খাইয়া আর-সকলে উঠিয়া গেল, ভানুমতী গেল না। আমার বলিল—ক’দিন এখন আছেন বাবুজী ? এবার বড দেরি কবে এসেছেন। কাল তো যেতেই দেব না। চলুন আপনাকে কাল ঝাটি ঝরনা বেড়িয়ে নিয়ে আসি ঝাটি ঝরনায় আরও ভয়ানক জঙ্গল । ওদিকে বড় বুনো হাতী । অনেক বনমযুরও আছে দেখতে পাবেন। চমৎকার জায়গা । পৃথিবীর মধ্যে এমন আর নেই। ভানুমতীর পৃথিবী কতটুকু জানিতে বড ইচ্ছা হইল। বলিলাম—ভানুমতী, কখনো কোন শহর দেখেছ ? —না বাবুজী । —দু-একটা শহরের নাম বল তো ? —গয়া, মুঙ্গের, পাটনা । —কলকতার নাম শোন নি ? —ই বাবুজী। —কোনদিকে জান ? —কি জানি বাবুজী । —আমরা যে দেশে বাস করি তার নাম জান ? —আমরা গয়া জেলায় বাস করি । —ভারতবর্ষের নাম শুনেছ ? ভানুমতী মাথা নাডিয়া জানাইল সে শোনে নাই । কখনও কোথায় যায় নাই চকমকিটোলা ছাডিয়া । ভারতবর্ষ কোনদিকে ? একটু পরে বলিল-আমার জ্যাঠামশায় একটা মহিষ এনেছিলেন, সেটা এবেল তিন সের, ওবেলা তিন সের দুধ দিত। তখন আমাদের এর চেয়ে ভাল অবস্থা ছিল বাবুজী, তখন যদি আপনি আসতেন, আপনাকে রোজ খোয় খাওয়াতাম । জ্যাঠামশায় নিজের হাতে খোয়া তৈরি করতেন। কি মিষ্টি খোয়। এখন তেমন দুধই হয় না তার খোয়। তখন আমাদের খাতিরও ছিল খুব । পরে হাতখানি একবার তুলিয়া চারিদিকে ঘুরাইয়া গর্বের সহিত বলিল—জানেন বাবুজী, এই সমস্ত দেশ আমাদের রাজ্য ছিল । সারা পৃথিবীট। বনে যে.গোড় দেখেন, সাওতাল দেখেন, ওরা আমাদের জাত নয় । আমরা রাজগোড় । আমাদের প্রজা ওরা, আমাদের রাজা বলে মনে । উহার কথায় দুঃখও হইল, হাসিও পাইল। মহাজনে দেনার দায়ে দুই বেলা যাহাঁদের