পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/২৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

t লাহোর [ ૨8ના ] লাহোর ના যায়। তাহার উত্তরপশ্চিম অভিমুখে দেখ নদী তীর পর্যন্ত -- এখানে কীকর, সিরীয, ভূখ, ঝনা, বান, ফুলাহি, কীল, বিস্তীর্ণ ভূখণ্ড জঙ্গলাবৃত। শিশু, আম্র, বকাইন, আমলতা, বর্ণ, পিপুল, বট প্রভৃতি বৃক্ষ উপরোক্ত নদীসমূহের অববাহিক প্রদেশ এবং খালপ্রবা হিত স্থান ব্যতীত এই জেলার আর কোথাও পৰ্য্যাপ্ত শস্ত । উৎপন্ন হয় না। জলের অভাবই তাহার একমাত্র কারণ। যেখানে কুপ খনন করিয়া জল পাওয়া যায়, অথবা খাল হইতে ব। অন্ত কোন কৃত্রিম উপায়ে শস্তক্ষেত্রে জলসেচন করা যায়, তথায় অন্তান্ত জেলার সমান শস্ত উৎপাদন করিতে পারা যায় ; কিন্তু বিশেষ চেষ্টা করিলেও তথায় শিয়ালকোট, হসিয়ারপুর বা জালন্ধরের দ্যায় শস্তোৎপাদন করা যায় না । ইরাবতী নদী এই জেলার মধ্য দিয়া এবং লাহোর নগরের সন্নিকট দিয়া প্রবাহিত। মধ্যে মধ্যে ইহার জলগতি পাৰ্ব্বত্য ভূমিতে বাধা প্রাপ্ত হইয়া নানা শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত হইয়াও ! পুনরায় কিছু দূরে আসিয়া পরস্পরে সম্মিলিত হইয়াছে। শতদ্রু ও বিপাশা নদী এক্ষণে জেলার সীমান্তভাগে পরস্পরে মিলিত হইয়া প্রবাহিত রহিয়াছে। এক সময়ে উহা স্বতন্ত্র শাখায় এই জেলার মধ্যে প্রবাহিত থাকিয়া সিন্ধুনদে মিলিত হইয়াছিল। এখনও মাঝার পূৰ্ব্বোক্ত পাধের নিকট বিপাশা নদীর পূৰ্ব্বতন খাত छूटे হয়। গ্রামবাসীদিগের মধ্যে কিংবদন্তী আছে যে, ১৭৫০ খৃষ্টাব্দে কোন অনৈসর্গিক কারণে এই নদীর গতি পারবৰ্ত্তিত হয়। লোকে বলিয়া থাকে, বিপাশা নদীর প্রখরস্রোত প্রবাচিত হইয়৷ এইস্থানে তপস্তানিরত শিগগুরুর কুটার ভাসাইয় লষ্টয়া যায়। সাধক প্রবর তাহাতে কুপিত হইয়া অভিসম্পাত করেন। তদবধি তৎপ্রদেশে বিপাশার গতিরোধ হইয়াছে। কর ও চুনিয়ান নগর এবং বহুসংখ্যক প্রাচীন গওগ্রাম এই পুরাতন নদীগর্ভের পার্শ্বে অবস্থিত। চাসবাসের সুবিধার জন্য এই জেলার চতুৰ্দ্ধিকে খাল কাটিয়া ভূমির উর্বরতাশক্তি বুদ্ধি করা হইয়াছে। তন্মধ্যে নানা শাখা ! বিস্তৃত বড়িদোয়াব খাল বিশেষ উল্লেখযোগ্য । ইহা শতদ্র হইতে আরম্ভ করিয়া লাহোর নগর ও মিঞান মীরের সেনানিবাসের মধ্য দিয়া প্রবাহিত হইয়ানিয়াজবেগের নিকট ইরাবতীতে সংযুক্ত উইয়ছে। ইহার কম্বর শাখা ও সোত্ৰাওন শাখা পুনরায় ঘুরিয়া শতদ্রুতে মিশিয়াছে। মোগলসম্রাট শাহজস্থানের প্রসিদ্ধ স্থপতি আলীমৰ্দ্দন খ এখানকার হস্নী খাল কাটাইয়াছিলেন। উঃ পূৰ্ব্বে শালিমারের বিখ্যাত উদ্যান ও ফোয়ারার জল সরবরাহ করিত, কিন্তু এক্ষণে বড়িদোয়াব খালের কলেবর করিয়েছে। এতদ্ভিন্ন কটাের, থানা ও সোহাগ নামক তিনটা থাত শতক্রর গর্ভ হইতে কাটাইয়া মাথা ও উক্ত নদীর মধ্যবর্তী ত্রিকোণাকার ভূমিভাগে জলদান করা হইতেছে। | প্রধানতঃ জন্মে। বনভাগে অন্তান্ত নানাজাতীয় বৃক্ষ এবং নেৰুড়ে চিতা, নীলগাই, বনবরাহ ও হরিণাদি পশু এবং নদীতীর প্রভৃতি স্থানে নানাজাতীয় পক্ষী বিচরণ করিতে দেখা যায়। বহু পূৰ্ব্বকাল হইতে এই জেলা আৰ্য-সভ্যতার কেন্দ্রস্থল ছিল। এখনও জনশৃষ্ঠ বনান্তরাল-প্রদেশস্থ ধ্বস্ত নগর এবং কুপতড়াগাদি তাহার পরিচয় প্রদান করিতেছে। ঐ সকল প্রাচীন কীৰ্ত্তি অপেক্ষাকৃত উচ্চভূমে অবস্থিত থাকায় অনুমান হয় যে, তৎকালে এথানকার জলরাশি অপেক্ষাকৃত উচ্চ স্তরে প্রবাহিত ছিল এবং অধিক সম্ভব তৎকালীন সুশিক্ষিত ও সভ্যদেশবাসিগণ সুকৌশলে আপনাদের প্রতিষ্ঠিত নগরাদিতে জলানয়নে সমর্থ হইয়াছিলেন । এখনও সেই প্রাচীন আৰ্য্যসভ্যতার কএকটা মাত্র নিদর্শন এখানে পরিলক্ষিত হইয়া থাকে। এই জেলার ইতিহাস লাহোর নগরের ইতিবৃত্তের সহিত সৰ্ব্বতোভাবে সংযুক্ত। উক্ত নগরের নামানুসারেই এই জেলার নামকরণ হইয়াছে। আফগানস্থান পৰ্য্যন্ত বিস্তৃত একটা সু প্রশস্ত রাস্তার উপর অবস্থিত হওয়ায়, এই নগর মাকিদনবীর আলেকসান্দারের ভারতাক্রমণের পূর্ব হইতেও পাশ্চাত্য বৈদেশিক শত্র হস্তে আক্রান্ত হইয়াছে। পঞ্চনদের সহিত গান্ধীররাজ্যের সম্বন্ধ মহাভারতাদি প্রাচীন গ্রন্থে বিবৃত দেখা যায়। ইসলামধৰ্ম্মস্রোত রোধ করিবার জন্ত এক সময়ে এই নগরে হিন্দুধৰ্ম্মের একটা প্রবল কেন্দ্র স্থাপিত হইয়াছিল। তদনন্তর গজনীরাজংশ এখানে রাজধানী স্থাপন কলিলে, ধীরে ধীরে মুসলমানগণ উপনিবেশ স্থাপন করিতে আরম্ভ করে। অতঃপর মোগলসম্রাট - গণ কিছুকালের জন্য এথানে রাজপাট স্থাপন করিয়াছিলেন । মহারাজ রণজিৎ সিংহের অভু্যদয়ে এই স্থান উন্নতির উচ্চতর সোপানে আরোহণ করিতে আরম্ভ করে এবং ক্রমে উহ পঞ্চনদ রাজ্যের রাজধানীরূপে পরিগণিত হয়। বর্তমান সময়ে, উহ! ইংরাজাধিকৃত একটী ক্ষবিস্তৃত প্রদেশের বিচারসদররাপে প্রতিষ্ঠিত রহিয়াছে। মাকিদনপতি আলেকসান্দার যে সময়ে ভারত আক্রমণ করেন, সেই সময়ে লাহোর জনপদের প্রসিদ্ধির বিশেষ কোন পরিচয় পাওয়া যায় না । খৃষ্টীয় ৭ম শতাব্দে যখন চীন-পরিব্রাঞ্জক বৌদ্ধতীর্থ পরিদর্শনে ভারতবর্ষে আগমন করেন, তখন তিনি এই স্থান অতিক্রম করিয়া জালদ্ধরে উপস্থিত হইয়াছিলেন। তৎকালে লাহোর নগর ব্রাহ্মণ্যধৰ্ম্মের কেন্দ্রস্থান ছিল। উক্ত শতাৰোঁর শেষভাগে যখন মুসলমানগণ সৰ্ব্বপ্রথম ভারতবর্ষ আক্রমণ করেন, তখন লাহোর নগরে আজমীর রাজবংশের একজন রাজা