পাতা:বৃহৎ বঙ্গ - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

d বৃহৎ ৰােজ কিন্তু বাঙ্গালীরা যে গুপ্তযুগের ধারা রক্ষা করিয়া আসিয়াছেন, তাহার অজস্র নিদর্শন আমাক বাঙ্গলার কপা-সাহিত্যে পাইয়াছি। বাঙ্গালীর প্রেমের আদর্শ যে গুপ্ত-যুগের কবিদিগকেও স্থানে স্থানে ছাপাইয়া গিয়াছে, তাহাতে সন্দেহ নাই। গুপ্তযুগের কবির অভূতপূৰ্ব্ব প্রতিভা সত্ত্বেও কতকটা অলঙ্কার-শাস্ত্রের দাসত্ব স্বীকার করিয়াছেন, রাজ-প্ৰাসাদ বা ঋষির আশ্রম ছাড়া তাহারা কদাচিৎ নিয়ে নামিয়া আসিয়াছেন-নিয়শ্রেণী তীহাদের কাব্য ও নাট্যে অগ্ৰাহ । কিন্তু বাঙ্গল কথা-সাহিত্যে শ্রেণী-ভেদ, পদ-বৈষম্য এরূপ কোন গণ্ডী আন্দেী নাই। এই কবিদের সাম্রাজ্য নর-হৃদয়,-সেই হৃদয়ের সুকুমার বৃত্তি, সৎসাহস, সংযম, ত্যাগ প্ৰভৃতি গুণের ভিত্তির উপব তীহাদের কবিত্ব-সৌধ প্রতিষ্ঠিত। কবিরা সমস্ত সামাজিক নিয়ম ও আইন কানুন অগ্ৰাহা করিয়া দুৰ্জয় সাহসের সহিত স্বভাবের পথে চলিযাছেন, চণ্ডালের বাডী অথবা বেদের নৌকা তাহারা অশুচিস্থান বলিয়া প্ৰত্যাখ্যান করেন নাই ; বিবাহিত জীবন-র্তাহাদের প্রেমের বেড়া দিয়া আকাশ-বাতাস রোধ করিয়া দাড়ায় নাই। কিন্তু তেঁাহাঙ্গের রচনা অদ্ভূতরূপে মৌলিক হইলেও কবিবা কোন দম্ভ প্ৰকাশ কবেন নাই ; সেই লেখা অনাড়ম্বন, স্বাভাবিক ও অবাধ-গতি।--তন্মধ্যে আদৌ প্রচার নাই। এই সকল গুণে আকৃষ্ট চইয়া ডা ষ্টেলা ক্র্যামবিস মহুয়া পড়িয়া বলিয়াছিলেন,-সমস্ত ভারতীয় সাহিত্যে এই গল্পের জোড়া নাই ; ডা সিলভ্যান লেভি লিখিয়াছেন, ফরাসী দেশের শীত-প্ৰধান আবহাওয়াব মধ্যে বাস করিয়া তিনি এই সকল গল্প পড়িবার সময়ে মনে করিযাছেন, তিনি চিব-বসন্তের রাজ্যে বিহার করিতেছেন, এবং সুপ্ৰসিদ্ধ শিল্পী রোদনষ্টাইন বলিয়াছেন,-অজন্তা ও অমাবাবতীর ষে সকল অপূর্ব রমণীমূৰ্ত্তি তিনি দেখিয়াছেন, এই সকল গল্পের নায়িকারা যেন সেই রমণীদেরই জীবন্ত লেখমালা। শ্ৰীমতী হেগ এই সকল গল্পের ষে প্ৰশংসা করিয়াছেন, তাহা মন্দিরে উচ্চারিত স্তব-স্তুতির মতই শোনায় । তিনি ফবাসী দেশের সর্বপ্ৰধান লেখক মাদাম দি লাফেয়েত্যি (Madam de Eafetye) এবং মেটােরলিঙ্কের রচনার খুৎ বাহির করিয়া বলিয়াছেন, বাঙ্গলা কথাসাহিত্যের নায়িকারা একেবারে নিখুৎ এবং এই গল্পগুলির নায়িকার সেক্সপীয়র ও রেসাইন-এর (Jean Racine) নারীচবিত্রের মত, য়ুরোপের ঘরে ঘরে পঠিত হওয়ার যোগ্য। “ইহারা জগতের চিরস্থায়ী গ্রন্থগুলির সঙ্গে এক পাণ্ডুক্তিতে আসনের দাবী করে। যুগে যুগে পাঠকগণ এই গল্পগুলির নব নব সৌন্দৰ্য্য আবিষ্কার করিবেন” (৩৪৮-৪০৬, পৃঃ ) { ৰাঙ্গলার স্থাপত্য ও শিল্পসম্বন্ধে বেশী কিছু লিখিবার নাই ; এক মসলিনই বঙ্গের শিল্প-কৃতিত্বের অপ্রতিদ্বন্দ্বী বিজয়বাৰ্ত্তা বহন করিতেছে। বাঙ্গলা ও নিকটবৰ্ত্তী প্রদেশগুলির f 9 svoj i মন্দিরগুলিতে যে সকল শিল্প-নৈপুণ্য প্ৰদৰ্শিত হইয়াছে, তৎসম্বন্ধে এক শত বৎসর পূর্বে প্ৰসিদ্ধ পণ্ডিত হাটন লিখিয়াছিলেন “pure ইহাদের একটি যদি যুরোপে থাকিত, তবে তাহা দেখিবার জন্য দেশ-বিদেশ হইতে কত বান্ধী ভিড় করিত, কত লেখক বড় বড় পুস্তক লিখিয়া, ইহাদের রচকের নাম, ধান, আকৃতি, প্ৰকৃতি, ব্যয় ও কাশ্মীদের প্রতিভা সম্বন্ধে যশ ঘোষণা কবিতেন ; কিন্তু এই অসাধারণ