পাতা:বেলা অবেলা কালবেলা - জীবনানন্দ দাশ.pdf/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

to : অন্ধকার থেকে গাঢ় অন্ধকার থেকে আমরা এ-পৃথিবীর আজকের মুহূর্তে এসেছি। বীজের ভেতর থেকে কী ক’রে অরণ্য জন্ম নেয়,— জলের কণার থেকে জেগে ওঠে নভোনীল মহান সাগর, কী ক'রে এ-প্রকৃতিতে—পৃথিবীতে, আহা, ছায়াচ্ছন্ন দৃষ্টি নিয়ে মানব প্রথম এসেছিল, আমরা জেনেছি সব –অনুভব করেছি সকলই । সূর্য জলে—কল্লোলে সাগর জল কোথাও দিগন্তে আছে, তাই শুভ্ৰ আপলক সব শস্থের মতন আমাদের শরীরের সিন্ধু তীর। এই সব ব্যাপ্ত অনুভব থেকে মানুষের স্মরণীয় মন জেগে ব্যথা বাধা ভয় রক্তফেনশীর্ষ ঘিরে প্রাণে সঞ্চারিত ক'রে গেছে আশা আর আশা ; সকল অজ্ঞান কবে জ্ঞান অালো হবে, সকল লোভের চেয়ে সৎ হবে না কি সব মানুষের তরে সব মানুষের ভালোবাসা । আমরা অনেক যুগ ইতিহাসে সচকিত চোখ মেলে থেকে দেখেছি আসন্ন সূর্য আপনাকে বলয়িত করে নিতে জানে নব নব মৃত সূর্যে শীতে ; দেখেছি নিঝরি নদী বালিয়াড়ি মরুর উঠানে মরণের-ই নামরূপ অবিরল কী যে ! তবুও শ্মশান থেকে দেখেছি চকিত রৌদ্রে কেমন জেগেছে শালিধান; ইতিহাস-ধুলো-বিষ উৎসারিত করে নব নবতর মানুষের প্রাণ প্রতিটি মৃত্যুর স্তর ভেদ ক’রে এক তিল বেশি চেতনার আভা নিয়ে তবু খাচার পাখির কাছে কী নীলাভ আকাশ-নির্দেশী !