পাতা:বৌ-ঠাকুরাণীর হাট - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
বৌ-ঠাকুরাণীর হাট

শুনিতে পান, এ বিষয়ে আপনিই অনুমান করিতে পারেন, আমি কেমন করিয়া অনুমান করিব?”

 একজন পাঠান গৃহে প্রবেশ করিল।

 প্রতাপাদিত্য বলিয়া উঠিলেন—“কি হইল? কাজ নিকাশ করিয়াছ?”

 পাঠান। “হাঁ মহারাজ, এতক্ষণে নিকাশ হইয়া গেছে।”

 প্রতাপাদিত্য। “সে কি রকম কথা। তবে তুমি জান না?”

 পাঠান। “আজ্ঞা হাঁ, জানি। কাজ নিকাশ হইয়াছে, তাহাতে আর ভুল নাই, তবে আমি সে সময়ে উপস্থিত ছিলাম না।”

 প্রতাপাদিত্য। “তবে কি করিয়া কাজ নিকাশ হইল?”

 পাঠান। “আপনার পরামর্শ মতে আমি তাঁহার লােকজনদের তফাৎ করিয়াই চলিয়া আসিতেছি, হােসেন খাঁ কাজ শেষ করিয়াছে।”

 প্রতাপাদিত্য! “ঘদি না করিয়া থাকে?”

 পাঠান। “মহারাজ, আমার শির জামিন রাখিলাম।”

 প্রতাপাদিত্য। “আচ্ছা ঐখানে হাজির থাক। তোমার ভাই ফিরিয়া আসিলে পুরস্কার মিলিবে।”

পাঠান দূরে দ্বারের নিকট প্রহরীদের জিম্মায় দাঁড়াইয়া রহিল।

 প্রতাপাদিত্য অনেকক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া মন্ত্রীকে ধীরে ধীরে কহিলেন,—“এটা যাহাতে প্রজারা কোন মতে না জানিতে পায় তাহার চেষ্টা করিতে হইবে।”

 মন্ত্রী কহিলেন—“মহারাজ, অসন্তুষ্ট না হন যদি ত বলি ইহা প্রকাশ হইবেই।”

 প্রতপাদিত্য। “কিসে তুমি জানিতে পারিলে?”

 মন্ত্রী। ইতিপূর্ব্বে আপনি প্রকাশ্য ভাবে আপনার পিতৃব্যের প্রতি দ্বেষ প্রকাশ করিয়াছেন। আপনার কন্যার বিবাহের সময় আপনি বসন্তরায়কে নিমন্ত্রণ করেন নাই, তিনি স্বয়ং অনিমন্ত্রিত আসিয়া উপস্থিত