পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৪
দশম উপদেশ।

দের মুক্তভাব নহে সংসারের অধীনতাতেই বদ্ধ ভাব, ঈশ্বরের অধীনতাতেই মুক্ত ভাব। “যদা সর্ব্বে প্রভিদ্যন্তে হৃদয়স্যেহ গ্রন্থয়ঃ। অর্থ মর্ত্তোঽমৃতোভবত্যত্র ব্রহ্ম সমশ্নুতে" যখন আমাদের মোহ, স্বার্থপরতা, দ্বেষ, কুটিলতা, এই সকল হৃদয়গ্রন্থি ভিদ্যমান হইবে; যখন আমরা ঈশ্বরকে সর্ব্বস্ব দান করিব; কেবল ফুল চন্দন নয়, কিন্তু প্রাণ মন সকলই তাঁহার হস্তে সমর্পণ করিব, তখনই আমাদের মুক্তি লাভ হইবে; তখন মর্ত্ত্য হইয়াও আমরা অমৃত হইব।

 অতএব ব্রাহ্মধর্ম্মের মুক্তি ব্রহ্মেতে লয় হওয়া নহে; ব্রাহ্ম ধর্ম্মের মুক্তি আত্মার অনন্ত কালের উন্নতি! ব্রাহ্মধর্ম্ম এ প্রকারও উপদেশ দেন না যে অন্যের হস্তে মুক্তির ভার সমর্পণ করিয়া আমরা মুক্ত হইব, কোন মানব দেবতা কি কোন ধর্ম্মযাজক আমাদের জন্য মুক্তি আনিয়া দিবেন। ব্রাহ্মদের বিশ্বাস ইহা নয় যে পুরাকালের কোন নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল ভক্ষণে আমরা একেবারে পতিত হইয়াছি; আমারদিগকে ঈশ্বরেরও ত্রাণ করিবার সাধ্য নাই; আমাদের অনুতাপও কোন কার্য্যের নহে; এক জন মানব-দেবতার সহায়তা চাই। ব্রাহ্মধর্ম্মের মতে ঈশ্বরই আমারদের মুক্তিদাতা, তিনিই আমারদের পরিত্রাতা। আমরা “আত্ম প্রভাবাৎ দেব প্রসাদাৎ” ঈশ্বরের প্রসাদে ও স্বীয় যত্নে অন্তরে মুক্ত না হইলে তীর্থ-দর্শনে বা গঙ্গা স্নানে বা কোন ঐন্দ্রজালিক ব্যাপারে আমারদের মুক্তি হইবে না। আমারদের মুক্তি এই পৃথিবীর মধ্যে কি কোন একটি স্বর্গ লো-