পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মুক্তি।
৯৩

কেই অবলম্বন করিয়া আছে। সেই সত্যের আশ্রয়ে এই তাবৎ সত্য রূপে প্রকাশ পাইতেছে, তাহা হইতে বিচ্ছিন্ন হইলেই ইহা অসৎ; কিন্তু বাস্তবিক কিছুই তাহা হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া থাকিতে পারে না; তবে আমরা যে বিচ্ছিন্ন করিয়া দেখি, সে আমাদের কল্পনা মাত্র। বৃক্ষকে কি কখন আমরা মূল হইতে বিচ্ছিন্ন মনে করিতে পারি? না জগৎ সংসারকে জগৎ কর্ত্তা হইতে বিচ্ছিন্ন মনে করিতে পারি? তাঁহার আশ্রয়ে থাকিয়া এই জগৎ সত্য রূপে প্রতিভাত হইতেছে। বৈদান্তিক মতের প্রধান পোষক যে শ্রীমৎ শঙ্করাচার্য্য, তাঁহার সিদ্ধান্ত এই যে আমরা সংসার হইতে উপরত হইয়া ও কর্ম্মের ফলাফলে নিরাকাঙ্ক্ষী হইয়া পর ব্রহ্মের উপাসনা করিলে তাঁহার সহিত এক হইয়া যাই; তাঁহাতে আর আমাতে কোন প্রভেদ থাকে না। হীনমতি কুলোকের হস্তে এই মত পড়িয়া তাহার ফল এই হইয়াছে যে তাহাদের মধ্যে পাপ-প্রবাহ বৃদ্ধি পাইয়াছে; তাহারা বলে আমি যাহা করিতেছি, ঈশ্বরই করিতেছেন; আমি পাপ পুণ্যের ভাগী নহি।

 জানামি ধর্ম্মং ন চ মে প্রবৃত্তির্জানান্যধর্ম্মং ন চ মে নিবৃত্তিঃ।
ত্বয়া হষীকেশ হৃদিস্থিতেন
যথা নিযুক্তোঽস্মি তথা করেমি।

 এই সমস্ত মত ব্রাহ্মধর্মের সম্পূর্ণ বিরোধী। আমরা ঈশ্বরের অনুচর হইয়া তাঁহার অধীনতাতেই চির কাল থাকিব। যতক্ষণ তাঁহার অধীন না থাকি, ততক্ষণ আমা-