পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঈশ্বর সত্য স্বরূপ।
২৭

সত্যের স্বরূপ এ প্রকার নয়। এতটুকু দেশে আছে, এত টুকু দেশে নাই—এ প্রকার বস্তু সত্য নহে। কতক জ্ঞান, কতক অন—কতক সদ্ভাব কতক অসদ্ভাব—কতক শক্তি কতক ত্রুটি; এপ্রকার জ্ঞান-বস্তুও সত্য নহে। অভাববিশিষ্ট পদার্থ প্রয়োগ হইলে সৎ শব্দের অর্থই হয় না। পূর্ণ বস্তুই সত্য। এই হেতু ঈশ্বর ভিন্ন সত্যের সঙ্গে আর কোন বস্তুরই মিল পাওয়া যায় না। কতক আছে, কতক নাই—আছে আর নাই—এই দুই একত্র হইলে, সকল বস্তু সীমাবদ্ধ হয়। এ বস্তু এক সময় আছে, এক সময় ছিল না; ইহা বলিলেই তাহার কালেতে সীমা হইল। এ ব্যক্তির কতক জ্ঞান, কতক অজ্ঞান; ইহা বলিলে তাহার জ্ঞানেতে সীমা হইল। যিনি দেশেতে অনন্ত, কালেতে অনন্ত, মঙ্গল ভাবে অনন্ত—যাঁহার অনন্ত জ্ঞান, অনন্ত প্রাণ, তিনিই একমাত্র সত্য পদার্থ। তিনিই সত্যের বিষয়—সত্যের আয়তন—সত্যের ভূমি। এই এক সত্য শব্দ তাঁহার সকল তত্ত্বের সমষ্টি-স্থান। সত্য ভাব পরিস্ফুটিত হইলে তাঁহার সকল স্বরূপ প্রকশ পায়। সত্যের মধ্যে জ্ঞান—প্রাণ— অনন্ত ভাব অন্তর্ভুত রহিয়াছে। তিনি সত্য স্বরূপ—তাঁহার কতক সাধু ভাব, কতক অসাধু ভাব; কতক মঙ্গল ভাব, কতক অমঙ্গল ভাব; এমত নহে; তিনি পরিপূর্ণ মঙ্গল স্বরূপ। বিনি নির্দ্দোষ, নিষ্পাপ, নিষ্কলঙ্ক, পবিত্র-স্বরূপ, তাঁহার অপেক্ষা, সুন্দর বস্তু আর কি আছে। তিনিই “সত্যং শিবং সুন্দরং”।

 সত্য শব্দ ঈশ্বরেতেই সম্পূর্ণ সংলগ্ন হয়। সত্যের সঙ্গে