পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
চতুর্থ উপদেশ।

অন্যান্য বস্তুর কোন বিষয়ে মিল দেখিয়া তাহাকে সত্য। বলি। জড় বস্তুর অস্তিত্ব এবং শক্তিমাত্র দেখিয়া তাহাকে সত্য বলি। জীবাত্মার জ্ঞান ও চেতন শক্তি দেখিয়া জীবাত্মাকে সত্য বলি। কিন্তু এসমুদয় বস্তুরই আদি আছে, অন্ত আছে। দেশ, কাল, গুণ, সকল বিষয়েই জীবাত্মার সীমা করা যায়। কিন্তু যিনি অনাদনন্ত পূর্ণ-জ্ঞান—পূর্ণ-মঙ্গল তিনিই সত্য। এই সমুদয় জগৎ সংসারকে আপেক্ষিক সত্য বলা যাইতে পারে,কিন্তু ঈশ্বরই কুটস্থ সত্য। এ সমুদয় আপেক্ষিক সত্য, কেন না অল্পকাল স্থায়ী বস্তু অপেক্ষা দীর্ঘ কাল স্থায়ী বস্তু সত্য; জড় বস্তু অপেক্ষা জ্ঞান বস্তু সত্য; মৃত বস্তু অপেক্ষা সচেতন বস্তু সত্য। কিন্তু পারমার্থিক সত্য পদার্থ কেবল তিনিই। এই বলিয়াই যে জগৎসংসার ভ্রান্তি-মূলক মিথ্যা, তাহা নহে। এসমুদায় মায়াও নহে, স্বপ্নও নহে। যেহেতু ইহার মূল যিনি, তিনি সত্য। এই জগৎ সংসার সত্য-মূলক। আমারদিগের বুদ্ধিতে জগতের অস্তিত্ব, জীবাত্মার অস্তিত্ব, এবং পরমাত্মার অস্তিত্ব প্রকাশ পাইতেছে, ইহার মধ্যে যদি কোন এক অস্তিত্বকে স্বপ্নের প্রতীয়মান বস্তুবৎ মিথ্যা বলা হয়। তবে অন্য অন্য সকল অস্তিত্বকেই তাহার ন্যায় মিথ্যা বলিতে হয়। মূল সত্য হইতে নিঃসৃত জগৎকে মিথ্যা না বলিয়া আপেক্ষিক সত্য বলা উচিত। এই সমুদয় জগৎ সকল সময়েতেই যে বিদ্যমান আছে, তাহা নহে—এক সময়ে ছিল না; যদি ঈশ্বরের ইচ্ছা হয়, তবে এক সময়ে থাকিবেক না। যাঁহার অস্তিত্ব সকল অস্তিত্বের মূলীভূত,