পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
ষষ্ঠ উপদেশ।

সবল হইয়াছে—পুণ্য-জ্যোর্তিতে জ্যোতিষ্মন্ হইয়াছে, বিষয়-সুখ যে কি ক্ষুদ্র তাহা তিনিই বুঝিয়াছেন। আমরা সংসারের সহিত সংগ্রাম করিয়া—কুপ্রবৃত্তিকে বল পূর্ব্বক নিরস্ত করিয়া বহু আয়াসে বহু দিবসে যে ধর্ম্ম-রত্ন উপার্জন করি, কোন পার্থিব ধন কি তাহার বিনিময়ে গ্রহণ করা যাইতে পারে? কখনই না। ধর্ম্মের শেষ পুরস্কার ঈশ্বর। ঈশ্বরই আমাদের যথার্থ লক্ষ্য স্থান। তাঁহা হইতে বিচ্যুত হইয়া তান্য যে দিকে গমন করি, সেই দিকই তিমিরাবৃত শূন্য। দিগ‍্দর্শনের শলাকা যেমন স্বাভাবিক অবস্থায় উত্তর দক্ষিণ মুখীন হইয়া থাকে এবং বাহির হইতে বিয় পাইলেই সেই শলাকা বিপরীত দিকে চালিত হয়, আমাদের আত্মাও সেই প্রকার। আত্মার স্বাভাবিক ভাবস্থাতে সে ঈশ্বরের দিকেই দৃষ্টি করে। কিন্তু যদি বিষয়াকর্ষণ প্রবল হয়—যদি র দৃষ্টান্ত বা কুসংসর্গের জাল বিস্তৃত হয়; তবেই সে অন্য দিকে গমন করে। আত্মার সুস্থাবস্থাতে ঈশ্বরই তাহার উপজীবিকা, ধর্ম্মই তাহার মন্ত্রী। পাপই বিকৃতি। ঈশ্বর হইতে বিচ্যুতিই অস্বাভাবিক। বালক। কাল অবধিই ঈশ্বরের ভাব এবং ধর্ম্মের ভাব অল্প অল্প পরিস্ফুটিত হইতে থাকে। বিষয়-জ্ঞানের সঙ্গে সঙ্গে বালকের মনে ঈশ্বর-জ্ঞান তারস্ত হয় এবং বিষয়-বুদ্ধির সহিত তাহার ধর্ম-বুদ্ধির উদ্বোধ হইতে থাকে। সেই স্বাভাবিক ঈশ্বরের ভাব এবং সেই স্বাভাবিক ধর্ম-বুদ্ধির উদ্দীপন করিয়া দিবার জন্য প্রথম হইতেই তাহার ধর্ম্ম প্রদর্শকের সহায় আবশ্যক। সত্য কথা বলাই বালকদিগের স্বাভাবিক