পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিষয়-সুখ এবং ব্রহ্মানন্দ।
৪১

ভাব; তাহারা কুটিলতা শিক্ষা না করিলে আর তাদের মিথ্যা বলিতে প্রবৃত্তি হয় না। পিতা মাতার প্রতি বালকদিগের যে একটি নির্ভরের ভাব—একটি অটল নিষ্ঠা আছে; বয়োবৃদ্ধি সহকারে সেই সকল ভাব ঈশ্বরেতেই পরিচালিত হওয়াই স্বভাবিক; কিন্তু সেই সকলের উদ্দীপন হয় না বলিয়া এক্ষণে নির্ব্বাণ প্রায় দেখা যাইতেছে। যখন তাহারা দেখে, তাহাদের পিতা মাতা কেবলই বিষয়ে মগ্ন আছেন, ঈশ্বরের উপাসনাতে কাহারো মন নাই; তখন কিরূপে তাহাদের ঈশ্বরের ভাব সমুজ্জ্বলিত হইতে পারে? এই হেতু পরিবারের মধ্যে এক জন সৎ আচার্য্য থাকা অত্যন্ত আবশ্যক। এই ব্রহ্মবিদ্যালয়ের কেবল এই উদ্দেশ্য, যাহাতে ধর্ম্মের ভাব এবং ঈশ্বরের ভাব সকলের আত্মাতে জাগ্রৎ হয়। ধর্ম্মের ভাব, কর্তব্য জ্ঞান, ঈশ্বর স্পৃহা সকলেরই আছে; কিন্তু তাহা উদ্বোধন করাই ইহার উদ্দেশ্য। আমরা দুর্ব্বলতা প্রযুক্ত যেমন জড়ীভুত হইতেছি, অজ্ঞান বশতঃ সে রূপ নয়। আমরা যাহা যাহা কর্ত্তব্য বলিয়া জানি—ঈশ্বরের আদেশ বলিয়া মান্য করি, তাহা যদি অনুষ্ঠানে পরিণত করিতে পারি; তবে আমারদের সৌভাগ্যের সীমা কি থাকে? ধর্মের আদেশ অমরদের বুদ্ধি-ভুমিতে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত আছে—ধর্ম্মের তীব্রতর ভৎর্সনাতে কুপ্রবৃত্তি-সকল অনেক সময়ে সঙ্কুচিত হইতেছে; কিন্তু সেই ধর্ম্মের বলকে আরো বলবান করা আমাদের প্রয়োজন। আমরা যদি আমারদের ঈশ্বরের ভাব কেবল স্বভাবের হস্তে অর্পণ করিয়াই ক্ষান্ত থাকি,