পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৪
ষষ্ট উপদেশ।

ব্যক্তি বিষয় লইয়া যে সুখী থাকিতে পারে, তাহাও নহে। বিষয় পাইবার পূর্ব্বে যে রূপ উদ্যোগ থাকে, যে রূপ উদ্যম থাকে, তাহা পাইলে আর সে রূপ থাকে না; পুনর্ব্বার নুতন বিষয়ের পাশ্চাতে মন ধাবমান হয়। বিষয় লাভে তৃপ্তি-সুখ কখনই হয় না। প্রথমতঃ বিষয় পাইবার জন্য কেমন ব্যগ্রতা ও কি কষ্ট। দ্বিতীয়তঃ না পাইলে কেমন তাসুখ! তৃতীয়তঃ বিষয় পাইলেও তাহাতে অতৃপ্তি! চতুর্থতঃ পাইবার পর তাহা নস্ট হইলে কেমন যন্ত্রণা! এই সকল যন্ত্রণা ও বিড়ম্বনার মধ্যে দিয়াই ঘোর বিষয়ী ব্যক্তির অহর্নিশ বিচরণ করিতে হয়। কোথায় যে সে শান্তি পাইবে, এমন স্থান নাই। তাহারা অমৃতের পুত্র হইয়া সংসার চক্রেই আবর্ত্তিত হইতে থাকে, কোথাও শান্তি পায় না। তাহারা সুখ-মরীচিকায় প্রতিবার আশাসিত এবং প্রতিবার প্রবঞ্চিত হইয়া কেবল ঘূর্ণায়মান হয় এবং পরিশেষে হয় তো সংসারের প্রতি মনুষ্যের প্রতি বিরক্ত হইয়া ঈশ্বরের মঙ্গল-স্বরূপেও দোষারোপ করিতে প্রবৃত্ত হয়।

 সেই সকল ব্যক্তিরা ইহা অবগত নহে, যে ক্ষুদ্র বিষয় লইয়া মনুষ্য কখনই তৃপ্ত থাকিতে পারে না। যাঁহার ভূমা ঈশ্বরকে প্রাপ্ত হইয়াছেন, তাঁহারা সর্ব্বতোভাবেই পরিতৃপ্ত থাকেন। ঈশ্বরকে যাঁহারা মূল ধন রূপে সঞ্চিত করিয়া রাখিয়াছেন; পার্থিব বিষয়ভাবে তাঁহারা মুমূর্ষু হয়েন না। বিষয় জনিত হর্ষ, শোক; সংসারের বিপদ সম্পদ; তাঁহারদিগকে অধিকার করিতে পারে না। সকল