পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০
সপ্তম উপদেশ।

ইহাদের মধ্যে সমুদয় প্রভেদ বিলীন করিতে চাহেন, তাঁহারা সহস্র সহস্র যুক্তিতেও তাহা অতি সামান্য লোককেও বুঝাইতে পারেন না। বিষয় আর বিষয়ী; ইহাদের মধ্যে কিছুতেই ঐক্য নাই—এ দুয়ের কোন এক গুণও সমান নহে। আকৃতি, বিস্তৃতি, বিষয়ের গুণ; আর স্মরণ, তুলনা, অনুমান; প্রীতি, দয়া; শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা; এবিষয়ীর গুণ; ইহার মধ্যে কিছুতেই সাদশ্য নাই। একজন দ্রষ্টা, স্প্রষ্টা, ঘ্রাতা, মন্তা, বোদ্ধা, কর্ত্তা; অপর আমাদের প্রত্যক্ষের বিষয়। আকাশ নাই আর জড় বস্তু আছে; এ আমরা মনেই করিতে পারি না। কিন্তু আকাশ বিষয়ীর অবলম্বন নহে।

 যখন শরীর আত্মা এত পৃথক্; তখন মৃত্যুর পরেই আত্মার কি প্রকারে বিনাশ হইতে পারে। আমরা কোন বস্তুরই বিনাশ কল্পনা করিতে পারি না। যাঁহার সৃজন শক্তিতে এ সমুদয় সৃষ্ট হইয়াছে, তাঁহারই সংহার—শক্তিতে এ সমুদয় ধ্বংস হইতে পারে। ঈশ্বরের পালনী ইচ্ছার বিরাম ব্যতীত সৃষ্টির কণামাত্রও ধংস হইতে পারে না। কিন্তু ঈশ্বরের সে ইচ্ছার বিরাম হইয়াছে কি না; এই প্রশ্নের উত্তর আমরা জড় বস্তু হইতেই প্রাপ্ত হইতেছি। জড় বস্তু মধ্যে কোন বস্তুরই বিনাশ হইতেছে না। জল বাষ্প রূপে উত্থিত হইয়া শুষ্ক হইয়া যাইতেছে; কিন্তু সেই বাষ্প আবার জল মূর্ত্তি ধারণ করিতেছে। শুষ্ক বৃক্ষ-পত্র-সকল ভূমিতলে পতিত হইয়া অদৃশ্য হইতেছে; কিন্তু তাহাই আবার বাষ্পীয় পদার্থ বিশেষে