পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৬
সপ্তম উপদেশ।

 ঈশ্বরের সহিত এখানে আমাদের যোগ হইলে পরকালের বিশ্বাস আরো অটল হয়। ঈশ্বরের সঙ্গে এখানে একবার সম্বন্ধ নিবদ্ধ করিলে আর কেহই সে বিশ্বাসকে খণ্ডন করিতে পারে না। এই অখণ্ড বিশ্বাসের উপরে নির্ভর করিয়াই প্রাচীন ঋষিরা বলিয়া গিয়াছেন, ‘যএতদ্বিদুরমৃতান্তে ভবন্তি’ ‘যাঁহারা ইঁহাকে জানেন, তাঁহারা অমর হয়েন।’ ঈশ্বরের সহিত আমাদের চিরন্তন সম্বন্ধ—সে সম্বন্ধ একবার নিবদ্ধ হইলে আর কোন কালেই তাহা নিরাকৃত হইবার নহে। আমরা ঈশ্বরের আশ্রয়ে চিরকালই অবস্থিতি করিব; এই দৃঢ় বিশ্বাস তাপেক্ষা পরকালের দৃঢ়তর প্রমাণ আর কিছুই নাই। শুদ্ধ তর্ক-তরঙ্গের উপরে পরকালের বিশ্বাস নির্ম্মাণ করা কোন কার্য্যেরই নহে। বিপক্ষেরা তকের বলে ইহা কদাপি প্রমাণ করিতে পারেন না, যে জীবাত্মার বিনাশ বা ভঙ্গ হইবে। আমরা বরং উপমিতি দ্বারা প্রাপ্ত হইতেছি, যে জীবের বিনাশও নাই ভঙ্গও নাই। কিন্তু এই সকল তর্কের আড়ম্বরীতে আপনার বুদ্ধিকেই চরিতার্থ করা হয়। আত্ম-প্রত্যয়ে নির্ভর ব্যতীত কেবল বুদ্ধির সিদ্ধান্তে মনের নিষ্ঠা হয় না। আপনাকে ভুলিয়া বিষয়-স্রোতেই ভাসিতে থাকিলে সে প্রত্যয়টি উৎপন্ন হইতে পারে না; ধর্ম্ম ও ঈশ্বরের সহিত যোগ না হইলে সে প্রত্যয় দৃঢ়ীভূত হয় না। অস্থায়ী বিষয়-লালসাতে নিরন্তুর বিক্ষিপ্ত থাকিলে অনন্তু কালের প্রতি একবারও দৃষ্টিপাত হয় না। যাহার সহিত আমাদের চির সম্বন্ধ, যিনি আমাদের ইহকাল ও পরকালের একমাত্র উপ-