পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬০
অষ্টম উপদেশ।

ব্রহ্মানন্দ আমাদের অক্ষয়ধন। মনুষ্যের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে তাঁহার ধর্ম্ম-প্রকৃতি ক্রমিকই প্রশস্ত ও উন্নত হইতে থাকিবে এবং তজ্জনিত আনন্দ আরো অধিক হইতে থাকিবে। যৌবন কালে যেমন নূতন নূতন সুখের প্রস্রবণ প্রমুক্ত হইয়া শৈশব-কালের সুখ সমুদায়কে অতিক্রম করে; আত্মার উন্নতাবস্থাতেও সেই রূপ জ্ঞান, ধর্ম্ম, ঈশ্বরপ্রীতি, এই সকল হইতেই আনন্দ ধারা নিঃসৃত হইয়া নিকৃষ্ট সুখ সমুদয়কে অতিক্রম করিয়া উঠিবে।

 ধর্ম্মের সঙ্গে আত্ম-প্রসাদের সঙ্গেই বিশেষ যোগ, বিষয়-সুখের সঙ্গে সে প্রকার নাই। আমাদের আস্বাদন না থাকিলে যেমন আহারের বিচার থাকিত না, সেই রূপ আত্ম-প্রসাদ না থাকিলে আমরা ধর্ম্মের মাধুর্য্য গ্রহণ করিতে পারিতাম না; সুতরাং অনেক স্থলে ধর্ম্মানুষ্ঠানের বিশেষ ব্যাঘাত জন্মিত। আমরা নিস্বার্থভাবে ধর্ম্ম-কার্য্য সাধন করিলেই ঈশ্বর আমাদের আত্মাতে আত্ম-প্রসাদ প্রেরণ করেন। বিষয়-সুখ যদিও অনেক সময় ধর্মের বিরোধী হয়; কিন্তু আত্ম-প্রসাদ বিশ্বাসী অনুচরের ন্যায় তাহার সঙ্গে থাকিয়া আমাদিগকে ধর্ম্ম-কার্য্যে আরো উৎসাহ দিতে থাকে, বিষয়-মুখ ধর্ম্মের নিয়ত সঙ্গী নহে! ধর্ম্মকেই সাধন করিতেই হইবে; তাহার আনুষঙ্গিক বিষয়-সুখ পাওয়া যার ভালই, না যায় তাহাতেই বা কি? আমাদের সকল বৃত্তির চরিতার্থতাতেই সুখ, তাহাদের মধ্যে ধর্ম্মের বিরোধী সুখকে পরিত্যাগ করতে ধর্ম্ম। ধর্ম্মকে রক্ষা করিতে হইলে বিষয়-সুখ