পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৮
অষ্টম উপদেশ।

স্বর্গের লোভে ধর্ম্মেতে অনুরক্ত হই, নরকের ভয়ে পাপ হইতে বিরত হই, ধর্ম্ম-জীবি জীবের ভাব এ প্রকার হওয়া উচিত নহে। যে ঈশ্বর আমাদের নিষ্কাম প্রীতি চাহেন, তাঁহা হইতেই আমরা নিঃস্বার্থ ধর্ম্মের শিক্ষা পাইতেছি। ঈশ্বর ধর্ম্মকে ধর্ম্মের জন্য আলিঙ্গন করিতে আমারদিগকে শিক্ষা দিতেছেন। আমরা লাভ ক্ষতি ফলাফল বিবেচনা করিয়া ধর্ম্মে প্রবৃত্ত হই, তাঁহার শিক্ষা এ প্রকার নয়। আমাদের নিস্বার্থ ভাব দেখিলে তবে তিনি প্রসন্ন হইয়া আমাদিগকে পুরস্কার দেন এবং তিনি নিজেই তাহার পুরস্কার হয়েন।

 মনুষ্যকে যাহার লোভ দেখাইয়া ধর্ম্মে আনিতে চাহে অথবা ভয় দেখাইয়া পাপ হইতে বিরত করিতে চাহে; তাহারা ধর্ম্মের প্রকৃত ভাব অবগত নহে।

 ঈশ্বর আমারদিগকে ভবিষ্যতে দণ্ড পুরস্কার দিবার জন্যই এখানে প্রেরণ করেন নাই। তিনি আমাদিগের জন্য একদিকে স্বর্গ আর একদিকে নরক সৃষ্টি করিয়া আমারদিগকে তাহার মধ্য স্থল এই পৃথিবীতে নিক্ষেপ করিয়া রাখেন নাই, যে মৃত্যুর পরে হুয় অনন্ত স্বর্গ-ভোগ বা অনন্ত নরক-ভোগ হইবে। আত্মার উৎকর্ষ সাধনই তাঁহার উদ্দেশ্য। এ পৃথিবীতেই আমাদের শিক্ষার শেষ হইবে না। আমরা সহজ জ্ঞানে এই বুঝিতে পারি যে ঈশ্বর “ধর্ম্মাবহং পাপমুদং।” ধর্ম্মের আবহ এবং পাপের মোচয়িতা। পাপীর দণ্ড অবশ্যই হইবে। ন্যায়বান্ ঈশ্বর পাপের উপযুক্ত দণ্ড অবশ্যই বিধান করিবেন;