পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মুক্তি।
৮১

যদি এই অভিপ্রায় না থাকিত, তবে আমাদের কর্ততৃত্ব থাকার বিশেষ অভিসন্ধি প্রকাশ পাইত না। আমাদের দিয়া কি সংসারের উন্নতি হইবে? সুখ-প্রবাহ বৃদ্ধি হইবে? সভ্যতা বিস্তার হইবে? জন-সমাজের শ্রীবিদ্ধি হইবে? এই উদ্দেশে কি তিনি আমাদিগকে কর্ত্তৃত্ব দিয়াছেন। তিনি যদি কর্ত্তৃত্ব না দিয়া আমাদিগকে যন্ত্র করিয়া নির্ম্মাণ করিতেন, তাহা হইলেও কি সেই সকল উদ্দেশ্য সিদ্ধ হইত না। তিনি যদি আমাদের স্বার্থপরতাকে আরো দূরদর্শী করিয়া দিতেন, আমাদের লোকানুরাগ-প্রবৃত্তি আরো তেজস্বিনী করিয়া দিতেন, তাহা হইলে কি জন-সমাজের শৃঙ্খলা রক্ষা হইত না? সুখই যদি আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য হইত, তাহা হইলে কি তিনি আরো প্রচুররূপে সুখ বর্ষণ করিতে পারিতেন না? তিনি আমাদিগকে কর্ত্তৃত্ব দিয়াছেন বলিয়া বরং আমরা অনেক সময়ে বিষয়-সুখ হইতে বঞ্চিতই হইতেছি। সুখই যদি আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য হইত, তাহা হইলে কি তিনি আমাদিগকে পশুর ন্যায় প্রকৃতির অধীন করিয়া সুখী করিতে পারিতেন না। আমরা কর্ত্তৃত্ব পাইয়া এই দেখিতেছি, যে বিষয় সুখের প্রতিকূলেই অনেক সময়ে যাইতে হয়। আমরা বিষয়াকর্ষণ অতিক্রম করিয়া তাঁহার প্রদর্শিত পুণ্য পথে যাইতে পারি, এখানকার সমুদয় শিক্ষার তাৎপর্য্যই এই। আমরা এখান হইতেই মুক্তির আস্বাদন প্রাপ্ত হইতেছি। বিষয়ের প্রতিকূলে―লোকের প্রতিকূলে—পাপের প্রতিকূলে আমাদের কর্ত্তৃত্ব যত চিন্তার করিতে পারি, ততই আমাদের মুক্ত