পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
১৩

অজন্তার শিল্পের মধ্যে কতকগুলিতে যেমন দেখা যায় যে বর্ত্তনা এবং রেখার যথার্থ সামঞ্জস্য ঘটিয়াছে, তেমনি অপর অনেক চিত্রের মধ্যে দেখা যায় যে বর্ত্তনার অংশ এত প্রবল হইয়া উঠিয়াছে যে তাহা রেখাকে অতিক্রম করিবার চেষ্টা করিয়াছে, শুধু মনুষ্যমূর্ত্তি অঙ্কনের মধ্যে নহে কিন্তু প্রাকৃতিক পদার্থ অঙ্কনের মধ্যেও লাবণ্য ও জীবন অনেক সময়ে কি বিস্ময়করভাবে প্রস্ফুট হইয়াছে। আবু পর্ব্বতের দিলোয়ারা মন্দিরে ইহার যথেষ্ট দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। যদিও ভাস্কর্য্যের মধ্যে কোনও মানুষের যথাযথ প্রতিকৃতি বড় একটা পাওয়া যায় না কিন্তু তথাপি সংস্কৃত সাহিত্য পড়িলে দেখা যায় যে ধনীদের মধ্যে বিশেষতঃ রাজাদিগের মধ্যে ছবিতে এইরূপ প্রতিকৃতি অঙ্কনের ব্যবস্থা প্রচুরভাবে বিদ্যমান ছিল। সাধারণ লোকের গৃহভিত্তিতেও চিত্র অঙ্কনের বিধি ছিল। চিত্রসূত্রে এইরূপ মনুষ্যের প্রতিকৃতি এবং তাহাছাড়া নানাবিধ প্রাকৃতিক দৃশ্য আঁকিবার নানা ভঙ্গি ইঙ্গিত বা পদ্ধতির ফল উল্লিখিত আছে।

 ভাবাভিব্যক্তিই ভারতীয় চিত্রকলাপদ্ধতির প্রাণপ্রদ ধর্ম্ম। সেইজন্যই ভাবটিকে ফুটাইবার জন্য দেশকালের বুদ্ধি ব্যাহত করিতে ভারতীয় চিত্রী কখনও দ্বিধা করিতেন না। একটি চিত্রের মধ্যে জীবনের নানাস্তরের নানাঘটনা চিত্রী একত্র করিয়া প্রকাশ করিতে অনেক সময়ই প্রয়াস করিয়া থাকেন। সম্ভবতঃ তাঁহাদের উদ্দেশ্য এই ছিল যে একটি দৃষ্টির ক্ষণের মধ্যে সমগ্র জীবনটিকে যুগপৎ উপনীত করা। কোন্ ঘটনার পর কোন