পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/২৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

भांकि यहांदनी “কি আবার বলবে ? ছেলেমানুষ, ওর কথার ভাৱি দাম!’-যশোদা একটু হাসিল । “আপনি রাগ করবেন না, ছেলেমেয়েগুলো আমার বড় বেয়াড় । বলুন রাগ করবেন না ? বলিয়া সত্যপ্ৰিয়র স্ত্রী যশোদার হাত ধরিল । ইস, এইজন্য সে এখানে একা বসিয়া আছে, বাড়ীর গিল্পী সে ! ধনীর গৃহিণীতে পরিণত হইতে না পারায় স্বামী-পুত্র, আত্মীয়-স্বজন, দাস-দাসী কারও সঙ্গে আঁটিয়া উঠিতে না পারায় একেবারে হাল ছাড়িয়া দিয়া নিজের একটা মানসিক বিকারের অবাস্তব জগতে ভাসিয়া গিয়াছে, সকলের অপরাধে নিজেকে যেখানে সে অপরাধী মনে করে, তার হাত ধরিয়া ক্ষমা চায় । কিছুক্ষণ পরে সত্যপ্ৰিয় আসিল । “খাওয়া হয়েছে ? বড় রাত হয়ে গেল। গাড়ী বলে দিয়েছি।” “গাড়ী কি হবে ? এইটুকু পথ হেঁটেই চলে যাব।” কিন্তু তা হয় না, যশোদা যে সত্যপ্ৰিয়র অতিথি । পথ যতটুকুই হোক, রাত্রিকাল, স্ত্রীলোক, হঁটিয়া যাওয়া চলে ? যশোদা জিজ্ঞাসা করিল, “জ্যোতিৰ্ম্ময়ব্যাবুর বাড়ীর সবাই কি চলে গেছে ?” “আধা ঘণ্টা আগে । আমিই বললাম জ্যোতিৰ্ম্ময়বাবুকে, একটু পরে তোমাকে পাঠিয়ে দেব তোমার ভায়ের সঙ্গে। গাড়ীটা একটু অটকা ছিল । তা তোমার ভাইকে তো কোথাও খুজে পাচ্ছি না। যশোদা ।” “সে তবে অাগেই চলে গেছে। কোত্তন করলে ওর শরীর বড় দুৰ্বল লাগে।” সত্যপ্রিয় নিজেই সঙ্গে করিয়া যশোদাকে গাড়ীতে তুলিয়া দিল। বোধ হয় সেদিন নন্দকে যে অপমান করা হইয়াছিল, আজ সুদে আসলে নন্দর দিদিকে সন্মান দিয়া তার ক্ষতিপূরণ হইতেছে। যশোদা ভাবিল, কি মতলব আঁটছ তুমি কে জানে। সত্যপ্রিয়কে একটু বেশী গম্ভীর ও অন্যমনস্ক মনে হইতেছিল। যশোদাকে আরেকদিন আসিবার জন্য অনুরোধ করিল। “শুনলাম বেয়াদবির জন্য মেয়েকে নাকি ধমক দিয়েছ। আমার কাছে নালিশ করতে এসেছিল, আমিও ধমক দিয়েছি। তবু আমার বাড়ীতে আমার মেয়েকে আমন করে বলবার সাহস কারও হতে পারে, ভাবতেও পারিনি। যশোদা ।” ‘হেলেমানুষের দোষ দেখিয়ে দেব, তাতে আর সাহসের কি আছে।” via O