ভদ্রতা করিয়া জিজ্ঞাসাও করিল — আপনাকে এক কাপ চা করে দি’?
চা? বিষ্ণুপ্রিয়া চা খায় না।
— খান না? — মন্দা সুন্দর অবাক হইতে জানে, কি আশ্চর্যি! — তা, চা, আমার মেজ ননদও খায় না। তার বিয়ে হয়েছে চিলপাহাড়ীর জমিদার বাড়ি, মস্ত বড়লোক তারা, চালচলন সব সাহেবি! বিয়ের আগে আমার ননদ খুব চা খেত, বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ি গিয়ে ছেড়ে দিলে। বললে, চা খেলে গায়ের চামড়া কৰ্কশ হয়। আমার মেজ ননদ খুব সুন্দরী কিনা, রঙ প্রায় গিয়ে মেমদের মত কটা। রঙ খারাপ হবার ভয়ে মরে থাকে। আমার কর্তাটিকে দেখেন নি? ওদের হল ফর্সার গুষ্টি, তাদের মধ্যে ওনার রঙ সবচেয়ে মাজা, তারপরেই আমার মেজ ননদ।
ছেলেদের জন্য বসিয়া কারো সঙ্গে কথা বলিবার অবসর মন্দা পায় না। উঠানে দুই ছেলে চৌবাচ্চার জল নষ্ট করিতেছে দেখিয়া সে উঠিয়া গেল। বিষ্ণুপ্রিয়া বলিল — আপনার ননদটি বেশ। খুব সরল।
一 মুখ্যু।
বিষ্ণুপ্রিয়া প্রতিবাদ করিল না। আঁচলে মুখ মুছিয়া শ্যামার চোখাচোখি হওয়ায় একটু হাসিল। বাহিরে ঝকঝকে রোদ উঠিয়াছিল। শহরতলীর বাড়ি, জানালা দিয়া পুকুরও চোখে পড়ে, গাছপালাও দেখা যায়। আর পাখি। শরৎকালে পথ ভুলিয়া কতকগুলি পাখি শহরের ধারে আসিয়া পড়িয়াছে।
বিষ্ণুপ্রিয়া বলিল — তোমার ছেলের জন্যে দুটো একটা জামা-টামা পাঠালে কিছু মনে করবে ভাই? মনে যদি কর তো স্পষ্ট বলো, মনে এক মুখে আর এক, করো না।
বিষ্ণুপ্রিয়ার বলার ভঙ্গিতে শ্যামা একটু অবাক হইয়া গেল। বলিল — জামার দরকার তো নেই।
— দরকার নাই বা রইল, বেশিই না হয় হবে। পাঠাবো?
শ্যামা একটু ভাবিয়া বলিল — আচ্ছা।
— আনকোৱা নতুন জামা, দর্জিবাড়ি থেকে সোজা তোমায় দিয়ে যাবে — আমার মেয়ের জামা-টামার সঙ্গে ছোঁয়াছুঁয়ি হবে না ভাই।
— হলই বা ছোঁয়াছুঁয়ি?
বিকালে বিষ্ণুপ্রিয়ার উপহার আসিল। কচি ছেলের দরকারী কয়েকটা