পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৩৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাণিক গ্ৰন্থাবলী -আমায় দেখেই তাই অপছন্দ হয়ে গেল। তারপর যে মেয়েটিকে নিজে দেখে পছন্দ করল-ওগো, বলনা সে দেখতে কেমন ছিল ? হাসছ যে ? আমার খুব অহঙ্কার হয়েছে ভাবিছ বুঝি ? না বাপু, আমি ওসব অহঙ্কার বুঝি না, ন্যাকানিপনার ধার ধারি না। সত্যি কথা বলব তাতে দোষ কি, তা সে নিজের সম্বন্ধেই হোক আর যার সম্বন্ধেই হোক ? আমি তো আর বলিনি, আমি আকাশের পরীর মত সুন্দরী ! মোটামুটি দেখতে সুন্দর আমি, এই পৰ্য্যন্ত, বাস । আমার মত সুন্দর মেয়ে গণ্ডা-গণ্ড গড়াচ্ছে পথে-ঘাটে। তুমিই তো বলেছিলে, সে মেয়েটা দেখতে কালো আর চোখ একটু ট্যারা, বলনি ? যাকু গে, যা বলছিলাম, বলি। কি কথায় কি কথা এসে পড়ল। দেখুন তো দিদি, এমনি করে” পেছনে লাগলে কেউ কথা কইতে পারে ? কি যেন বলছিলাম-হঁ্যা, সেই হ’ল আমার জায়ের রাগ | এমন ব্যবহার সুরু করলে আমাদের সঙ্গে কি বলব । নগদ টাকা সম্বন্ধে বলতে লাগল, উনি যে নগদ নেননি। সে কি আর অমনি অমনি—নগদ নিলে টাকাটা আমার ভাসুরের হাতে পড়ত, এ বেশ বৌ এর গায়ে গয়না হ’ল। আমার পিসী,— পিসীই আমায় মানুষ করেছে, বডড ভালবাসে আমায়-পিসী নিজে থেকে আটশো টাকার গয়না বেশী দিয়ে দিল । গয়না যা দেবার কথা ছিল তাতো দিলই, তার উপরে আরও সাড়ে আটশো টাকার গয়না, নগদ টাকার বদলিতে । ভাসুর তিনশো টাকা মাইনে পান, ওক’টা টাকা নগদ পেলেই বা তিনি এমন কি বড়লোক হ’য়ে যেতেন, তিন মাসের মাইনেও নয় ! কিন্তু জা’ আমার ওই কথা বলে বলে ভাসুরের মন ভাঙাতে লাগল। তারপর ও যেই চাকরীটা নিল,- না নিয়েই বা কি করবে। বলুন, ভাল একটা চাকরীও জুটিয়ে দেবে না, এদিকে ঘরে বসে’ থাকার জন্যও খোচাবে । ভাসুর নয়, আমার জা’ । হাত খরচের দু’চারটে পয়সা তো মানষের লাগে ? দাদার কাছে চাইলে তিনি বলবেন, আহা বৌদির কাছ থেকে নে না গিয়ে। বৌদির কাছে চাইলে এমন করে” মুখ বাকাবে- একবার দু’বার চেয়ে শেষে ও আর চাইত না । আমি একটা গয়না দিলাম বেচাতে, তাও বেচাবে না । এদিকে নন্তি কেনার একটা পয়সা নেই। তখন এই চাকুরীটা নিয়ে নিল। কিন্তু আমার জায়ের সে কি রাগ ! বলে কি, লোকের কাছে দাদার মাথা হেঁট করাবার জন্যে ইচ্ছে করে’ এই KOyr