পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

भांभिक ७iश्दब्नी তার খোলার বাড়ীর সামনে চওড়া বারান্দায় চৌকী থাকত, নতুন একখানা পাটি বা মাদুর বিছিয়ে মানুষকে বসতে দিলে না হত ভদ্রতার ত্রুটি, না হত বেমানান । ‘তামাসা করছি আলি সা’ব ।” “নিশ্চয়! তামাসা বুঝিনা কেষ্টবাবু?” ওসমানও হাসবার চেষ্টা করল। “তবে পর্দা একদিন আপনাদের ঘুচাতে হবে। আমার ছেলের কাছে আপনার ছেলের বৌ পর্দা রাখবে না।” \ “ঠিক কথা। কি জানেন কেষ্টবাবু, আমারও একদিন ঝোঁক ছিল। কলেজ ছেড়ে বেরিয়েছি, সাদি করেছি তিন কি চার সােল। বাবার এক ধমকে ঝোক কেটে গেল ।” “আপনার ছেলের ঝোক কাটবে না । তার বাবা তাকে ধমক দেবে না । কি বলেন ?” ‘খোদা জানেন । ধমক না দেই, হয়তো স্রেফ মারা লাগাব।” ওসমান অনেকটা সামলে উঠেছে। কৃষ্ণেন্দুর কথা ও ব্যবহার নিজের অজ্ঞাতসারেই তার মনে কাজ করছিল, সে শুধু বুঝতে পারছিল মানুষটাকে আজ তার বিশেষ করে ভাল লাগছে। মানুষের সহজ ও শান্ত ভাব অতিশয় সংক্রামক, অন্যের গভীর উত্তেজনাও অল্প সময়ে ফুরিয়ে দিতে পারে। ঝির ঝির করে। অপরাহ্নের বাতাস বইতে সুরু করেছিল, তিনজনেরই ঘামে ভেজা শরীর স্নিগ্ধ হয়ে যাচ্ছে । বাসন হাতে একটি মাঝবয়সী স্ত্রীলোক মাটির খাজে বঁাশ বসানো ধাপে পা দিয়ে তালগাছের গুড়িতে তৈরী পুকুরের ঘাটে নেমে গেল। ওসমান সরে এসে তার দিকে পিছন ফিরে দাড়াল । “একে চেনেন না ?’ কৃষ্ণেন্দু শুধোল । ওসমান সায় দিয়ে শুধু বলল, “চিনি।” তারপর এক মুহুর্তে কি ভেবে অমায়িক ভাবেই হীরনকে জিজ্ঞেস করল, “ভাল আছেন ?? হীরেন সম্পর্কে ওসমানের ভদ্রতার অভাবটা কৃষ্ণেন্দু ঠিক মত বুঝে উঠতে পারছিল না । শত্রু বাড়ীতে এলে তাকে খাতির করে, এই প্ৰকৃতি ওসমানের । এতক্ষণে সে টের পেলে যে হীরেনকে শত্রু ভেবে নয়, সে তার ভূতপূর্ব মনিবের ছেলে বলে ওসমানের ভয় হয়েছে তার বিনয়কে হয়তো সে তার বাপের বেতনভোগী মানুষের স্বাভাবিক দীনতা হিসাবে গ্রহণ করবে, প্ৰভু যে ভাবে ভূত্যের নম্রতাকে গ্ৰহণ করে সেই ভাবে । ) 3 Ve