পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOKS. in V9V:28 মানিক রচনাসমগ্র কুমুদ তুমি বলায় কুসুম রাগ করিয়া বলিল, কথা বলতে শেখোনি দেখছি তুমি। ভদ্রলোক CIVI ? তারপর দুজনেই দমিয়া যাওয়ায় আর কথা হইল না। তালগাছগুলি নিঃশব্দে দাড়াইয়া রহিল। একটা মাছরাঙা বুপি করিয়া তালপুকুরে আছড়াইয়া পড়িল। দুপুরবেলাটা বন্ধুর সঙ্গে গল্প করিয়া কাটাইয়া বেলা পড়িয়া আসিলে কুমুদ বিদায় গ্রহণ করিল। সকাল সকাল পালা শুরু হবে। যাবে তো শশী ? যাব বইকী ! নিশ্চয় যাব। হারুর বাড়ির পিছনে সাতগাঁ পর্যন্ত বিস্তারিত ধানের খেত। তালপুকুবের ধার হইয়া খেতের আল দিয়া কুমুদ সাতগার কাছারি বাড়ি পৌঁছিল। তালপুকুরে সে মতিকে দেখিবার আশা করিতেছিল। কিন্তু যাত্রা শুনিতে যাওয়ার আয়োজনে ব্যস্ত মতির পুকুরে আসার সময় ছিল না। কুসুম রাধিতেছিল। সন্ধ্যার আগেই খাওয়ার পাট চুকিয়া যাওয়াই চাই। মতি আজ বিনা বাক্যব্যয়ে তাহার সমস্ত তুকুম পালন করিয়া যাইতেছিল। পরান সব বিষয়ে উদাসীন। সন্ধ্যার আবির্ভাবে তাহার বোন আর বউ যত ব্যস্ত হইয়া ওঠে, সে যেন ততই ঝিমাইয়া যায়। রান্নাঘরে বসিয়া কুসুমের সঙ্গে সে প্রথম একটু গল্প জমাইবার চেষ্টা করিয়াছিল। গল্প কবিবার সময় না থাকায় কুসুম তাহাকে আমল দেয় নাই ; দাওয়ায় বসে কুঁকা টানো গো না বাবু? মেয়েমানুষের আচল-ধরা পুরুষকে আমি দুচােখে দেখতে পাবি না।-- কুসুমের ভৎসনাব্য চিরকাল পর্যানের খারাপ লাগে। তবে স্পষ্ট খারাপ লাগার ভাবটা এত অল্প সময়ের মধ্যে মনের একটা উদাস বৈরাগ্য ও দেহেব একটা ঝিমানো আলস্যে পরিণত হইয়া যায় যে রাগিব।ার অবসর প্রায়ই সে পায় না। মাঝে মাঝে কুসুমকে তাহার ভারী ছেলেমানুষ মনে হয়। চোদ্দো বছর বয সে তার বউ হইয়া এতকাল কুসুমের শরীরটাই যেন বড়ো হইয়াছে, মনের বয়স বাডে নাই। Ꭸ.Ꭿ মোক্ষদাকে একখানা ফরসা কাপড় পরিতে দেখিয়া পরান জিজ্ঞাসা করে, তুমিও যাবে নাকি মা, योद्धों *न्ट ? না, আমার আবাব যাত্রা কী!!! জোর করিয়া ধরিলে মোক্ষদা। যাইতে রাজি আছে। কিন্তু এরা কেউ যাইতে বলিবেও না। আগে হইতেই মোক্ষদা। তাহা জানে। তাই সাতবাদের বুড়ি পিসির সঙ্গে সে আগেই পরামর্শ ঠিক করিয়া রাখিয়াছে। তারা দুজনে যাত্রা শুনিতে যাইবে। বাড়ি আসিয়া মোক্ষদা। তাহা হইলে বলিতে পরিবে, যাত্রা শুনিবার শখ তাহাব একটুও ছিল না। কী করিবে, আরেকজন টানিয়া লইয়া গেল। জোর করিযী। 5न्शिी व्लक्षेशी लक्ल ! পরান বলে, ফরসা কাপড় পরে তুমি তবে যােচ্ছ কোথা ? সাঁতরাদের বাড়ি যাব বাবা। যাদুর পিসি একবার ডেকেছে। কুসুম ঝা করিয়া সামনে আসিয়া পড়ে। কাল যেয়ো মা, কাল যেয়ো। আমরা এখন বেরোব, তুমি চললে সাঁতরাদের বাড়ি। বাড়িতে তাহলে থাকবে কে ? মোক্ষদা তার কী জানে। যার খুশি থাক । তোমরা যাবে যাত্রা শুনতে, বাড়ির ব্যবস্থা তোমরাই করো বাছা। আমি তার কী জানি ? আমি বুড়োমানুষ সব ব্যাপারে আমাকে টান কেন? আমি আছি নিজের শতেক জ্বালায়। কুসুম রাগিয়া বলে, জ্বালা বাপু সংসারে সবারই আছে। ঘরে বসে জ্বললেই হয় ? এমন শত্ৰুতা করা কেন ? আগেই জানি শেষকালেতে একটা ফ্যাকড়া বাধবে!