পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOOkS. in পুতুলনাচের ইতিকথা ՖԳ Տ শশী একটু বিচলিত হয়। কুমুদ গয়নার দোকানের কথা জিজ্ঞাসা কবিয়াছে কেন ? তাও এক কথা বলিতে বলিতে হঠাৎ জিজ্ঞাসা করিয়াছে!! কী ভাবিতেছে ও ? শশী ভাবে, সৃষ্টিছাড়া গোযার ছেলে,-জগতে এমন কাজ নাই যা করে না, –ওই সব করিয়াই যেন সুখ পায়। কিন্তু গয়নার দোকানের খবর নেয় কেন ? শশী আরও ভাবে যে খবর লইতে হইবে বিনোদিনী অপেরা পাটি বাজিতপুরে অভিনয় করার সময় সেখানকার কোনো গযনার দোকানে কিছু ঘটিয়াছে কিনা। শশীর মনের মধ্যে সন্দেহটা খচখচ করিয়া বেঁধে বইকী! সে মনে করে বইকী যে আচ্ছা! পাগল সে, এ কী কথা, এও কি কখনও হয় ? তবু সে ভাবিয়া রাখে, বাজিতপুরের গয়না দোকানের গত দুমাসের কুশল কালই জানিবার চেষ্টা করিবে। এই অন্যায় কাজটা করিবার আগাম প্ৰায়শ্চিত্ত হিসাবে রাত বারোটার সময় বাড়ি ফেরার আগে কুমুদকে সে পরদিন দুপুরে তাহার ওখানে আহারের নিমন্ত্ৰণ কবিয়া যায়। পবানকে বলে, মতিকে এবার বাড়ি নিয়ে যাও না পরান ? কত রাত জগবে ? পরানেরও ঘুম পাইয়াছে। সে বলে, যাবে কী!! কিন্তু মতিকে ডাকিবামাত্ৰ চলিয়া আসে। আজ যাত্রা শুনিতে তাহাব ভালো লাগিতেছিল না। যে কাচা মনে বিনা কারণেই সর্বদা আনন্দ ভরিয়া থাকে, যে কোনো একটা তুচ্ছ উপলক্ষে মনে যাহার উত্তেজিত সুখ হয, শীতলবাবু আব্ব বিমলবাবুর পরিবারের মেয়েব যাত্রা শোনাব উৎসাহ তাহার নষ্ট কবি যা দিযাছে। মতি যেন চুরি করিয়া বাড়ি ফিরিল। তবু, কী সুন্দর ওই মেয়েমানুষগুলি! এক একজন যেন এক একটি ছবি । হাবু ঘোষ যেখানে বজাঘাতে মবিয়াছিল, সেখানটা বিষাক্ত সাপেক আস্তানা। হাবু ঘোষেব বাড়ির কাছে তালবনের সাপগুলির বিষ নাই। বিষ নাই? কুমুদকে যে সাপটা কামড়াইয়াছিল সেটার বিষ ছিল না। সেটা জলেব সাপ, টোড়া সাপ। কিন্তু তালবনের সব সাপ কি জলের সাপ, সব সাপ কি টোড়া সাপ ? কে বলিবে! মতি তাহা জানে না। শেষ পর্যন্ত তাহাকে স্বীকাব করতে হয় যে, অনা DDBK BBDDDJDB BDLLDS BBBLLD DBDS মাতিব দুকানে দুটি মাকডি দোলে। মাকড়ি দুটিব চাঁদ দুটির কোলে একরতি তারা দুটিও দোলে। কুমুদ নিজেব হাতে তাহাকে মাকড়ি পরাইয়া দিয়াছে। ওর মধ্যে একটা নূতন, ঝকঝকে, অন্যটা। অনেক দিনের পুরানো, মলিন । এও একটা সমস্যার কথা বইকী! মতি যত বোকাই হােক,-আসলে, সে আর এমনকী বেশি বোকা ?--এটুকু মতি খেয়াল করিয়াছিল! নূতন মাকডি দেখিলেই সকলে ধরিয়া ফেলিবে যে ! সে বলিবে কী ? কৈফিয়ত দিবে কী? রাজপুত্র প্রবীর, দুপুরবেলা তালপুকুরের ধারে ম্যাকড়িটি নিজের হাতে তাহার কানে পরাইয়া দিয়াছে শুনিলে বাড়িতে তাহাকে আর আস্ত রাখিবে না। কুমুদ এ সমস্যারও মীমাংসা করিয়া দিয়াছে। বাড়ি যাওয়ার আগে (বাড়ি যেন মতির কত দূর!) কান হইতে দুটা মাকড়িই মতি খুলিয়া ফেলিবে। রাত্রে তেঁতুল মাখাইয়া রাখিয়া দিয়া মাকড়ি। জিজ্ঞাসা করিলে মতি বলিবে, সাফ করেছি। তেঁতুল দিয়ে আর সোডা দিয়ে। মতি এই কথা বলিবে। এই সত্য কথাটা। কুমুদের বুদ্ধি দেখিয়া মতি অবাক হইয়া গিয়াছে। —অন্য সাপে কামড়ালে মরে যেতাম? আমি মরে গেলে তুমি কী করতে? আমি ? আমি কী করতাম ? কী জানি কী করতাম।