bang labOOOkS. in পুতুলনাচের ইতিকথা 9*} \} এমনি করে তুমি, গোপাল বলিয়াছিল, পিসাের রাখবে? লোকে ডাকতে এলে যাবে না ? মক্কেল বলিয়াছিল, যামিনী খুড়ো কোনোদিন এতটুকু উপকার করবে যে ওর জন্য এত করছ? নিজের সর্বনাশ করে পরের উপকার করে বেড়ানো কোন দেশি বুদ্ধির পরিচয় বাপু ? আমার মার যদি ওমনি অসুখ হত ?----শশী বলিয়াছিল। কেন বলিয়াছিল কে জানে! তোমার মা তো বাপু বেঁচে নেই ? কপাল ভালো, তাই আগে আগে ভেগেছেন । তোমার যা সব কীর্তি—যে কীর্তি সব তোমার। ——তুই উচ্ছন্ন যাবি শশী! যামিনী কবিবাজের বউ বঁচিয়া উঠিবার পর বিপজ্জনক গাম্ভীর্যের সঙ্গে গোপাল বলে, এইবার কাজকর্মে মন দাও শশী। যামিনী খুড়োর ইচ্ছে নয় তুমি আর ওদের বাড়ি যাও। ঠাকুর্দাকে পুলিশে দেওয়া উচিত। সর্বনাশ! শশী। এ সব বলে কী? তোমার ইচ্ছেটা কী শুনি ? হ্যা হে বাপু, মনে বাসনাটা তোমার কী? সব ছেড়ে ছুড়ে আমি কাশী চলে গেলে তুমি বোধ হয় খুশি হও? গুরুদেব তাই বলছিলেন। বলছিলেন, আর কেন গোপাল, এইবার চলে এসো। আমি ভাবছিলাম, শশীব একটু স্থিতি করে দিযে যাই, হঠাৎ সব ছেড়ে চলে গেলে ও কোনদিদ - সামলাবে। কিন্তু তুমি এ রকম আবম্ভ করলে আর একটা দিনও আমি থাকি কী করে ? গোপাল করিবে সংসাব ত্যাগ, গোপাল যাইবে কাশী! সম্মুখ যুদ্ধ ত্যাগ করিয়া পিছন হইতে গোপালের এই ধরনের আকস্মিক আক্ৰমণ শশীর অভ্যাস হইয়া গিয়াছে, সে এতটুকু টলে না। কী অন্যায় কাজটা করেছি। আমি, তাই বলুন না। কঁী কলেছ ? মুখে চুনকালি মেখেছি। সবাই কী বলছে তোমাব কানে যায় না-আমার কানে আসে। যামিনী খুডোব বউয়েব অসুখে তোমার এত দরদ কেন ? ডাক্তার মানুষ তুমি, একবার গেলে, ওষুদ দিলে, চলে এলে। দিনরাত রোগীর কাছে পড়ে থাকলে বলবে না লোকে যে আগে থাকতে কিছু না থাকলে এ সব ৩।আপনার বানানো কথা । এ অভিযোগ সত্য বলিয়া গোপালের রাগ বাড়িয়া যায়। গোপাল ছেলের সঙ্গে কথা বলে না। একটি কথা নয়। বাহিরেব ঘরে ফরাশের উপর খাতপত্র ছডইয়া বসিয়া গোপাল হিসাব দেখেখাতক, ঋণপ্রার্থী, পরামর্শপ্রার্থী ও অনুগ্রহপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে। শশী ঘরের ভিতর দিয়া পার হইযা যাইবার সময় গোপাল হঠাৎ কথা বন্ধ করিয়া আড়াচোখে ছেলের দিকে তাকায। কথা বলিবে না, না বলুক, ছেলেকে গলার আওয়াজও সে শুনাইবে না কি? তা নয়। শশীকে দেখিলে গোপালোব ডাকিত ইচ্ছা হয, শশী শোন। এই ইচ্ছাটা দমন করিবার সময় গলা দিযা গোপালের আওযাজ বাহির হয় না। গোপাল বাক্যাহারা হইয়া থাকে। শশী বাহির হইয়া গেলে অনুগ্রহপ্রার্থীকে বলে, “ধিয়ে এসো তো যাচ্ছে কোথায ? সে যদি আসিয়া বলে, যামিনী কবিরাজের বাড়ি-গোপাল একদম খেপিয়া যায। ইয়ারকি ? ইযারকি হচ্ছে আমার সঙেগ ? অনুগ্রহপ্রার্থীর চোখে আর পলক পড়ে না। যামিনী কবিরাজের বউয়ের গুটিগুলি শুকাইয়া ঝরিয়া পড়িতে কার্তিক মাস কাবার হইয়া অগ্রহায়ণেরও কয়েক দিন লাগিয়াছে। তাহাকে দেখিলে এখন ভয় করে, করুণা হয়। সর্বাঙ্গের ছোটাে ছোটাে ক্ষতগুলি এখনও লালচে রঙের কদৰ্য কতগুলি গর্ত। সময়ে বার কয়েক চুমটি পড়িয়া পড়িয়া