পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুতী।
৩৫

মিত অশোকশাখা নিষ্প্রয়োজনে হেমচন্দ্র ছুরিকা দ্বারা খণ্ড খণ্ড করিতেছিলেন, এবং মূহুর্মূহুঃ পথপ্রতি দৃষ্টি করিতেছিলেন, যেন কাহারও প্রতীক্ষা করিতেছেন। যাহার প্রতীক্ষা করিতেছিলেন, সে আসিল না। দিগ্বিজয় আসিল, হেমচন্দ্র দিগ্বিজয়কে কহিলেন,

 “দিগ্বিজয়, ভিখারিণী আজি এখনও আসিল না। আমি বড় ব্যস্ত হইয়াছি। তুমি একবার তাহার সন্ধানে যাও।”

 “যে আজ্ঞা” বলিয়া দিগ্বিজয় গিরিজায়ার সন্ধানে চলিল। নগরীর রাজপথে গিরিজায়ার সহিত তাহার সাক্ষাৎ হইল।

 গিরিজায়া বলিল, “কে ও দিগ্বিজয়?” দিগ্বিজয় রাগ করিয়া কহিল, “আমার নাম দিগ্বিজয়।”

 গি। “ভাল দিগ্বিজয়—আজি কোন্‌ দিগ্জয় করিতে চলিয়াছ?”

 দি। “তোমার দিগ্‌।”

 গি। “আমি কি একটা দিগ্? তোর দিগ্বিদিগ্‌ জান নাই।”

 দি। “কেমন করিয়া থাকিবে—তুমি যে অন্ধকার। এখন চল, প্রভু তোমাকে ডাকিয়াছেন।”

 গি। “কেন?”

 দি। “তোমার সঙ্গে বুঝি আমার বিবাহ দিবেন।”

 গি। “কেন ভোমার কি মুখ-অগ্নি করিবার আর লোক যুটিল না।”

 দি। “না। সে কাজ তোমাকেই করিতে হইবে। এখন চল।”

 গি। “পরের জন্যেই মলেম। তবে চল।”

 এই বলিয়া গিরিজায়া দিগ্বিজয়ের সঙ্গে চলিলেন। দিগ্বি-