কহিলা; “সাবাসি, দূত! তোর কথা শুনি,
কোন্ বীরহিয়া নাহি চাহেরে পশিতে
সংগ্রামে? ডমরুধ্বনি শুনি কালফণী,
কভু কি অলসভাবে নিবাসে বিবরে?
ধন্য লঙ্কা, বীরপুত্রধাত্রী! চল, সবে,—
চল যাই, দেখি, ওহে সভাসদ্ জন,
কেমনে পড়েছে রণে বীর-চূড়ামণি
বীরবাহু; চল, দেখি জুড়াই নয়নে।”
উঠিলা রাক্ষসপতি প্রাসাদ-শিখরে,
কনক উদয়াচলে যেন দিনমণি
অংশুমালী। চারিদিকে শোভিল কাঞ্চন-
সৌধ-কিরীটিনী লঙ্কা—মনোহরা পুরী!—
হেমহর্ম্ম্য সারিসারি পুষ্পবন মাঝে;
কমল-আলয় সরঃ; উৎসরজঃ ছটা;
তরুরাজি; ফুলকুল— চক্ষুবিনোদন,
যুবতীযৌবন যথা; হীরাচূড়াশিরঃ
দেবগৃহ; বিপণি, রঞ্জিত নানা রাগে,
বিবিধ রতন পূর্ণ; এ জগৎ যেন
আনিয়া বিবিধ ধন, পূজার বিধানে,
রেখেছে, রে চারুলঙ্কা, তোর পদতলে,
জগতবাসনা তুই, সুখের সদন।
দেখিলা রাক্ষসেশ্বর উন্নত প্রাচীর—
অটল অচল যথা; তাহার উপরে,
বীরমদে মত্ত, ফেরে অস্ত্রীদল, যথা
শৃঙ্গধরোপরি সিংহ। চারি সিংহদ্বার
(রুদ্ধ এবে) হেরিলা বৈদেহীহর; তথা
পাতা:মেঘনাদবধ কাব্য.pdf/১৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯৫—২২০
প্রথম সর্গ।